উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির কারণে তিস্তা নদীতে পানি বেড়েছে। এতে রংপুরের গঙ্গাচড়ায় চরাঞ্চলে চাষ করা অপরিপক্ব বাদামখেত তলিয়ে গেছে। যা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকেরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ বছর গঙ্গাচড়ায় ৩৬৫ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ৩০ হেক্টর জমির বাদাম পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। সেখান থেকে খরচের টাকা পুষিয়ে নিতে হিমশিম খেতে হবে বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা।
গতকাল বুধবার উপজেলার চর মহিপুর, পূর্ব ইচলি, চর ইচলি, চর ইশোরকুল, শংকরদহ, ছালাপাক, আলফাজটারী, শেখপাড়া, চিলাখালসহ কয়েকটি চর ঘুরে দেখা গেছে, পানির নিচে তলিয়ে যাওয়া খেত থেকে গাছসহ বাদাম তুলে নৌকায় করে নিয়ে আসছেন কৃষকেরা। এসব অপরিপক্ব বাদাম গাছ থেকে ছাড়িয়ে রাস্তার ধারে পলিথিন বিছিয়ে স্তূপ করে রেখে দিচ্ছেন।
লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের পূর্ব ইচলি চরে বাদাম তুলছিলেন সাইয়েদুল ইসলাম। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ বছর প্রায় ১০০ শতক জমিত বাদাম চাষ করছুং। হঠাৎ ভারত থাকি নদীত পানি আসায় সউগ তলে গেইছে। আর কদিন গেইলে বাদামগুলা সউগ পুরাট হইল হয়। তা হইলে কয়টা টাকাও পাইনো হয়। কায় যানে যে হঠাৎ করি নদীর পানি আসি সউগ একে বাড়ে তলে যাইবে। তলে গেইলে এভাবে তো রাখা যায় না। এ পানি কবে কমবে। তাই তুলে নেই চোল। যা হয় হোক।’
কথা হয় চর বাগেরহাট এলাকার বাদামচাষি মফিজ উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি এবার ৭০ শতক জমিতে বাদাম চাষ করেছেন। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘বাহে সাংবাদিকের ব্যাটা, এগুলো কি তোরা ভালো করি লেখি দিবার পান না, যাতে নদীটা দুই পার্শ্বে বান্দে? তা হইলে তো আর হামার এত কষ্ট হয় না। এত কষ্ট করি আবাদ করি যদি ঘরত তুলবার আগতে পানিত ডুবি নষ্ট হয়া যায়, তা হইলে আবাদ করি লাভ কী?’
এ বিষয়ে কথা হলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ শাহিনুর ইসলাম জানান, আগাম অতি বৃষ্টি ও তিস্তা নদীর পানি বাড়ার ফলে উপজেলার প্রায় ৩০ হেক্টর জমির বাদাম নিমজ্জিত হয়েছে। যেহেতু আবহাওয়া প্রতিকূলে, তাই নিমজ্জিত জমি থেকে পানি অপসারণসহ রোগবালাই দমনের জন্য কৃষি বিভাগ থেকে কারিগরি পরামর্শ দেওয়া অব্যাহত রয়েছে।