চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে প্রায় ১০ বছর ধরে অচল একটি রেলওয়ে রিলিফ ক্রেন সচল করা হচ্ছে। দেশের বৃহত্তম নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় ইতিমধ্যে এর ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। সচল করে ক্রেনটি শিগগিরই রেলওয়ে রিলিফ ট্রেন বহরে যুক্ত করা হবে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, রিলিফ ক্রেনটি সচল করায় রাষ্ট্রের প্রায় ৪৫ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ১৯৬৮ সালে জাপান থেকে বাষ্পীয় ইঞ্জিনচালিত সাতটি রিলিফ ক্রেন আমদানি করা হয়। ক্রেনগুলো জাপানের হিটাচি কোম্পানিতে তৈরি। এসব ক্রেন দিয়ে দুর্ঘটনা কবলিত বা লাইনচ্যুত ট্রেনের বগি উদ্ধার কাজ পরিচালনা করা হয়। এর মধ্যে ৪০ টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন এমজি-৩৪০০১ নম্বর রিলিফ ক্রেন রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে মিটারগেজ রেলপথে উদ্ধারকাজে পরিচালিত হয়। কিন্তু ক্রেনটি ২০১২ সালে অচল হয়ে পড়ে।
বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু অতিক্রম করে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় আনতে না পারায় কোনোক্রমে অচল ওই ক্রেন মেরামত করা সম্ভব হচ্ছিল না। অচল অবস্থায় চট্টগ্রামের পাহাড়তলীর লোকোশেডে প্রায় ১০ বছর ধরে এটি পড়ে ছিল। ফলে এর সচল হওয়া নিয়ে একরকম অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। পরে বিশেষ ব্যবস্থায় বোনারপাড়া লোকোশেডে আনা হয় ক্রেনটি। সেখান থেকে ২০২৩ সালের ২৬ এপ্রিল সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় মেরামতের জন্য পাঠানো হয়।
রেলওয়ে কারখানার একটি সূত্রে জানা গেছে, ক্রেনটি মেরামতে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৫ লাখ টাকা। অথচ একটি নতুন মিটারগেজ রিলিফ ক্রেন আমদানিতে খরচ হতো ৪০ থেকে ৪৫ কোটি টাকা। সেই টাকাটা সাশ্রয় হয়েছে।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ক্রেনসপের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী শাহিনুর ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখানে আনার পর ক্রেনটি সম্পূর্ণ খুলে ফেলা হয়। এরপর এটি সচল করতে কারখানার শ্রমিক-প্রকৌশলীরা কাজ শুরু করেন। ক্রেনটি সচল করাই আমাদের জন্য এখন বড় চ্যালেঞ্জ। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় দীর্ঘ ১০ মাসে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন যন্ত্রাংশ মেরামত ও রিকন্ডিশনিংয়ের ৯০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি, আগামী এপ্রিল মাসে রেলপথে পরীক্ষামূলক দৌড় (ট্রায়াল রান) সম্পন্ন করে এটি রেলওয়ে ট্রাফিক বিভাগকে হস্তান্তর করতে পারব।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) সাদেকুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবেই এখানে অচল ক্রেনটি সচল করা হচ্ছে।