নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা–সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিপেটা করলে সংঘর্ষ বাঁধে। এ সময় পুলিশের একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ ১২ জন আহত হয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার উপজেলার তারাব পৌরসভার বরপা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা জানান, রূপগঞ্জের এসিএস টেক্সটাইল নামে একটি পোশাক কারখানায় গত বছরের ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত শ্রমিকদের বেতন বকেয়া রয়েছে। গত কয়েক দিন ধরেই মালিকপক্ষ শ্রমিকদের ওই বকেয়া বেতন পরিশোধ নিয়ে টালবাহানা করে। ঈদের আগে তাদের বকেয়া বেতন বোনাসসহ সবকিছু পরিশোধ করার কথা ছিল।
আজ বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) নির্ধারিত তারিখে বেতন–বোনাস দেওয়ার কথা থাকলেও পরে জানানো হয়, ঈদের পরে সেসব পরিশোধ করা হবে। ক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা এই খবরে মহাসড়কে নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
শ্রমিকদের সরাতে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাস ছোড়ে। এ সময় শ্রমিকেরা প্রায় ৩০ / ৪০টি গাড়ির কাচ ভাঙচুর করে।
শ্রমিকেরা আরও জানান, মালিকপক্ষ গত জানুয়ারি মাস থেকে কেবল বেতন দেওয়ার কথা বলে শ্রমিকদের বিনা বেতনে কাজ করিয়ে যাচ্ছে। ঈদকে সামনে রেখে অনেক শ্রমিক ঋণ করে চলছে। সবারই ধারণা ছিল, ঈদের আগে বেতন বোনাস বুঝে পাবে। কিন্তু আজকে যখন বলেছে, ঈদের পরে বেতন–বোনাস দেবে তখনই সবাই বুঝতে পেরেছে মালিকের বেতন দেওয়ার কোনো ইচ্ছে নেই। তারা কেবল সময় ঘুরিয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় কীভাবে আমরা ঈদ করব? আমাদের পরিবারে ঈদের আনন্দ বলতে কিছু নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারখানার একজন শ্রমিক বলেন, ‘পুলিশ আমাদের বেধড়ক লাঠিপেটা করেছে। কারখানার অনেক শ্রমিক লাঠির আঘাতে আহত হয়েছে। এ ছাড়া টিয়ার গ্যাসে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। সব মিলিয়ে ৩০ / ৪০ জনের মতো আহত হয়েছে। যাদের ১০ / ১২ জনকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জুবায়ের হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের ছোড়া ইটের আঘাতে নারায়ণগঞ্জ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম মাথায় আঘাত পেয়েছেন। বর্তমানে মহাসড়কে যান চলছে এবং পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। কারখানার সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’