মাকে নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে মেয়ের এমন অভিযোগে আদালতের নির্দেশে মমতাজ বেগম (৫৮) নামের এক নারীর লাশ দাফনের দুই মাস পর কবর থেকে তোলা হয়েছে। আজ বুধবার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার ছয়হিস্যা গ্রামের কবরস্থান থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাসান মো. হাফিজুর রহমানের উপস্থিতিতে এই লাশ তোলা হয়।
কবর থেকে লাশ তোলার বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেন নারায়ণগঞ্জ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) উপপরিদর্শক মো. গোলাম মোস্তফা। তিনি বলেন, ‘আদালতের নির্দেশের মমতাজের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত শুরু করা হয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
মামলা থেকে জানা গেছে, মমতাজের স্বামীর নাম মৃত আবুল হোসেন। তাঁর শ্বশুর বাড়ি ও বাবার বাড়ি ছয়হিস্যা গ্রামের একই জায়গায়। গত ১৮ এপ্রিল রাতে স্বামীর ঘরের মেঝেতে মমতাজের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় লোকজন। মমতাজের শরীরে আঘাতের চিহ্ন থাকায় তাঁর মেয়ে মুন্নির সন্দেহ হয়। তবে মমতাজের বাবা আব্দুল খালেক প্রধান ও তাঁর পরিবারের দাবি তিনি স্ট্রোক করে মারা গেছেন। এই মৃত্যু রহস্যজনক হওয়ায় নিহতের মেয়ে মুন্নি বাদী হয়ে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে গত ২৭ এপ্রিল পিটিশন মামলা দায়ের করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, বাবার বাড়ির পরিবার ও মমতাজের মধ্যে পারিবারিক কলহের সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে প্রতিদিন কোনো না কোনো বিষয়ে ঝগড়া লেগে থাকত তাঁদের মধ্যে। এ ছাড়া মমতাজের টাকা ও সম্পত্তি নিয়ে পুত্রবধূর মধ্যেও কলহ ছিল। গত ১৮ এপ্রিল রাতে মমতাজের মৃত্যু হয়।
মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে মমতাজের মেয়ে মুন্নি ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁর শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন ও ডান চোখ রক্তাক্ত-ফুলা অবস্থায় দেখতে পান। কিন্তু খালেক প্রধানের পরিবার এই মৃত্যুকে স্ট্রোক বলে দাবি করেন। এ সময় শরীরে আঘাতের চিহ্ন থাকায় মুন্নি তাঁর মায়ের ময়নাতদন্ত দাবি করেন। একপর্যায়ে মমতাজের বাবার বাড়ির লোকজন মুন্নিকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তড়িঘড়ি করে লাশ দাফন করেন বলে দাবি করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি।
মমতাজের মেয়ে জিনাত ফাহিমা মুন্নি বলেন, ‘আমার মাকে নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে। তা ছাড়া তাঁর ঘরে থাকা টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকার ও দলিলপত্রের কোনো সন্ধান না পাইনি।’