জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলা শিক্ষা অফিসে কর্মদিবসে পতাকা উত্তোলন করা হয় না। পতাকার জন্য নির্ধারিত বেদি থাকলেও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় না। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দাবি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে পতাকা উত্তোলন করলেই হয়। তাই এখানে পতাকা উত্তোলন করা হয় না।
গত পাঁচ দিন সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে পতাকা উত্তোলনের জন্য বেদি থাকলেও তাতে অফিস চলাকালীন পতাকা তোলা হয়নি। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় গিয়ে দেখা যায় পতাকা উত্তোলন হয়নি।
সরকারি বিধিমালা থেকে জানা যায়, ১৯৭২ সালে জাতীয় পতাকা বিধিমালা তৈরি করা হয়, যা ২০২১ সালে সংশোধন করা হয়। ফ্লাগ রুলস ৬.১ ধারায় বলা হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে সব কর্মদিবসে পতাকা উত্তোলন করা হবে।
শিক্ষা অফিসের অফিস সহায়ক আলী রাজাকে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় না কেন জিজ্ঞেস করলে বলেন, ‘স্যার বলেছেন ইউএনও অফিসে পতাকা তোলা হয়। আমাদের তোলা লাগবে না। তাই আমাদের পতাকা উত্তোলন করা হয় না।’
উপজেলা শিক্ষা অফিসারের হিসাব সহকারী আতিকুর রহমান বলেন, ‘পতাকা উত্তোলন করা হয়। বিশেষ করে জাতীয় দিবসগুলোতে পতাকা উত্তোলন করা হয়।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই পতাকা উত্তোলন হয় না। কখনো পতাকা উত্তোলন করতে দেখিও নাই।’
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম খানের কাছে কর্মদিবসে পতাকা উত্তোলনের নিয়ম রয়েছে কি না—এ প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘না, আমাদের উপজেলায় ইউএনও একটি ইউনিট। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওঠালেই হয়। আর ওই কম্পাউন্ডের মধ্যে আর কারও উঠাইতে হবে না।’ জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা লাগবে না উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার এমন কোনো নির্দেশনা রয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ নির্দেশনা রয়েছে যে সেটা একটি ইউনিট, উপজেলার মধ্যে যত অফিস আছে, আর কেউ ওঠাবে না।’
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমি ১৭ বছর ধরে চাকরি করছি। আমি দেখতাছি তো। ওই কম্পাউন্ডের মধ্যে যতগুলো প্রতিষ্ঠান রয়েছে ইউএনও অফিসে একটি পতাকা উত্তোলন করলেই সব অফিসে পতাকা উত্তোলন করা হয়ে যায়।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সেলিম মিঞা বলেন, ‘উপজেলায় প্রতিটি সরকারি দপ্তরের অফিসে কর্মদিবস চলাকালীন জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে হবে। তবে একই ভবনে যদি একাধিক দপ্তরের কার্যালয় হয় সেখানে একটি পতাকা উত্তোলন করলে হয়।’
জামালপুরের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এম এম মিজানুর রহমান বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস এবং শিক্ষা অফিস একই ক্যাম্পাসে রয়েছে, যার কারণে পতাকা উত্তোলন করা হয় না। যদি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নির্দেশনা থাকে তাহলে পতাকা উত্তোলন করবে।’
উল্লেখ্য, উপজেলা শিক্ষা অফিসের নিজস্ব ভবন রয়েছে এবং ওই ভবনে আর কোনো দপ্তর নেই।