পদ্মাসেতু চালু হলে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে বন্ধ হয়ে যাবে লঞ্চ চলাচল। এই নৌরুটে চলাচলকারী ৮৭টি লঞ্চের সঙ্গে হাজারখানেক পরিবারের জীবনজীবিকা জড়িত। লঞ্চ বন্ধ হলে উপার্জনও বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন তাঁরা।
এই সংকট কাটিয়ে উঠতে দেশের অন্যান্য নৌরুটে লঞ্চ স্থানান্তরের চিন্তাভাবনা করছেন মালিকেরা। এ বিষয়ে তাঁরা বিআইডব্লিউটিএর কাছে লিখিত আবেদনও করেছেন। পদ্মা সেতুতে যান চলাচল উদ্বোধনের তারিখ ঘোষণার বেশ আগে থেকেই বিকল্প নৌরুট খুঁজছেন বাংলাবাজার ঘাটের লঞ্চ মালিকেরা।
বর্তমানে এই রুটে ৮৭টি লঞ্চ চলাচল করছে। সেতু চালু হলে ভিন্ন নৌরুটে লঞ্চগুলো যাতে চালানো যায় সে জন্য চিন্তাভাবনা করছে লঞ্চ মালিক সমিতি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া-মাঝিকান্দি লঞ্চ মালিক সমিতি। তিন/চার মাস আগে সমিতির সদস্যরা বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেশের কয়েকটি নৌরুট পরিদর্শনও করেছেন বলে জানা গেছে। তবে নতুন নৌরুট তৈরির বিষয়ে এখন পর্যন্ত কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো আশ্বাস পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন লঞ্চ মালিকেরা।
বাংলাবাজার-শিমুলিয়া-মাঝিরকান্দি লঞ্চমালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, নতুন রুটের খোঁজে বেশ কয়েকটি নৌরুট পরিদর্শন করেছেন লঞ্চ মালিকেরা। এর মধ্যে জামালপুরের জামালপুর-সারিয়াকান্দি রুট, নড়িয়া-চাঁদপুর রুটের আলুবাজার ফেরিঘাট এবং ফরিদপুরের চরভদ্রাসন-মৈনট ঘাটে লঞ্চ সার্ভিস চালুর বিষয়ে প্রাথমিক পরিকল্পনা রয়েছে। তবে পরিদর্শনের পর কয়েক মাস পেরিয়ে গেলেও কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তেমন কোনো আভাস পাওয়া যায়নি।
এদিকে করোনাকালে লঞ্চ বন্ধ থাকায় মালিক-শ্রমিকেরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এখন সেতু চালু হলে এ ঘাটের লঞ্চগুলো অন্যত্র চালাতে না পারলে কয়েক হাজার পরিবার বিপাকে পড়বে।
লঞ্চ মালিক সমিতির শিমুলিয়া জোনের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির বলেন, ‘এই নৌরুটে ৮৭টি লঞ্চ রয়েছে। প্রতিটিতে চালক-শ্রমিকসহ কমপক্ষে দশজন সদস্য কাজ করেন। সে হিসাবে অন্তত দশটি করে পরিবার এসব লঞ্চের ওপর নির্ভরশীল। সব মিলিয়ে হাজার খানেক পরিবারের রুটি-রুজির জায়গা এই লঞ্চ। সেতু চালু হলে নৌরুটে লঞ্চের দরকার হবে না। আমরা বিকল্প নৌরুটে আমাদের লঞ্চ চালানোর জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দুইবার লিখিত আবেদন জানিয়েছি। তবে এখন পর্যন্ত কোনো আশ্বাস আমরা পাইনি।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএর বাংলাবাজার ঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আক্তার হোসেন বলেন, ‘লঞ্চ মালিকেরা নতুন রুটে লঞ্চগুলোর চালু করার আবেদন করেছেন। তাঁদের সঙ্গে নিয়ে কর্মকর্তারা বেশ কয়েকটি রুট পরিদর্শনও করেছেন। এখন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিলে সেসব রুটে এখানকার লঞ্চগুলো স্থানান্তর করা যেতে পারে।’
পদ্মা সেতু সম্পর্কিত আরও পড়ুন: