যশোরের বেনাপোলে ভারতফেরত এক বাংলাদেশি যাত্রীর মালামাল লুট ও ক্রসফায়ারে হত্যার হুমকির অভিযোগে বেনাপোল কোম্পানি বিজিবির সিপাহি মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আরমান হোসেন বাদীর অভিযোগ গ্রহণ করে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার বাদী ঢাকার নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ী মাসুদ আহমেদ (৩১)।
বাদীর আইনজীবী মো. রুহিন বালুজ জানান, মাসুদ আহমেদের মালামাল লুট ও হত্যার হুমকির অভিযোগে বিজিবি সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আদালত অভিযোগ গ্রহণ করে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
বাদী মাসুদ আহমেদের অভিযোগ, তিনি ৯ সেপ্টেম্বর ব্যবসায়িক কাজে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ভিসায় ভারতে যান। ১৬ সেপ্টেম্বর দেশে ফেরার সময় পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের জন্য ১০টি শাড়ি, ১০টি পাঞ্জাবি, ১০টি ফুল প্যান্ট, ২০টি চশমা এবং বিভিন্ন আইটেমের ৫ হাজার টাকা মূল্যের কসমেটিক নিয়ে আসেন। ওই পণ্যগুলো নিয়ে ইমিগ্রেশন, কাস্টমস, বিজিবি চেকপোস্ট চেকিং, স্ক্যানিং ও ক্লিয়ারেন্স সম্পন্ন করে ইজিবাইকে যশোরের উদ্দেশে রওনা হন।
পথিমধ্যে বেনাপোলের সাদিপুর রাস্তার মোড়ের পূর্ব পাশে জিএম পরিবহন কাউন্টারের সামনে বিজিবির সিপাহি মনিরুজ্জামান মোটরসাইকেলে করে ইজিবাইকের সামনে এসে গতিরোধ করেন। এ সময় বাদীকে জোরপূর্বক মালামালসহ বেনাপোল কোম্পানি ক্যাম্পে নিয়ে যান। বাদীকে বাইরে রেখে ক্যাম্পের ভেতরে মালামাল নেওয়া হয়। এ সময় বিজিবির সিপাহি মনিরুজ্জামান বাদীকে বলেন, ‘এসব মালামালে সমস্যা আছে। আমাকে ৫০ হাজার টাকা দিলে মালামাল ছেড়ে দেব।’
বাদীর কাছে টাকা নেই জানালে মনিরুজ্জামান বাদীকে গালিগালাজ শুরু করেন। বাদী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানাবেন বললে মনিরুজ্জামান বাদীকে বলেন যে, ‘বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোকে আমি ক্রসফায়ার করব অথবা অস্ত্র মামলায় ফাঁসিয়ে দেব।’
একপর্যায়ে বাদীকে তাড়িয়ে দেয়। ওই ঘটনা ক্যাম্পের সিসি ক্যামেরায় রেকর্ড আছে বলেও অভিযোগে দাবি করা হয়েছে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বিজিবি বেনাপোল কোম্পানির সিপাহি মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমি কোনো মালামাল জব্দ করিনি। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ সঠিক নয়।’
অভিযোগের বিষয়ে ৪৯ বিজিবির কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাহেদ মো. মিনহাজ আজকের পত্রিকা বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। কোনো বিজিবি সদস্য কারও মালামাল লুট করতে পারে না। বরং তারা উদ্ধার করে কাস্টমে জমা দেন। তবে যিনি মামলা করেছেন; ওনার প্রথমে উচিত ছিল মামলা করার আগে আমাদের কাছে অভিযোগ দেওয়া। অভিযোগ পেলে আমরা তদন্ত করতাম। দোষী প্রমাণিত হলে ওই বিজিবি সদস্যের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া যেত।’