কোচের দরজায় ‘বাদুড়ঝোলা’ হয়ে থাকা মানুষ নিয়ে ঢাকা ছেড়েছে পঞ্চগড়গামী আন্তনগর একতা এক্সপ্রেস। আজ শুক্রবার সকালে সরেজমিনে এমন চিত্র দেখা গেছে রাজধানীর ঢাকা তথা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে।
আজ শুক্রবার সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে পঞ্চগড়ের উদ্দেশে স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার কথা। সকাল ৯টা ৫৮ মিনিটের দিকে স্টেশনের সেন্ট্রাল মাইকে ঘোষণা হলো, অল্প সময়ের মধ্যে ৩ নম্বর প্ল্যাটফরমে এসে দাঁড়াবে একতা এক্সপ্রেস। ঘোষণার দুই মিনিটের মধ্যে প্ল্যাটফরমের প্রায় ৭০০ বর্গমিটার জায়গা মানুষে পরিপূর্ণ হয়ে গেল। সবাই লাইনের দিকে তাকিয়ে দেখছে, কখন আসবে ট্রেন। পরে ১০টা ১ মিনিটে একতা এক্সপ্রেস ট্রেন ৩ নম্বর প্ল্যাটফরমে এসে হাজির হয়।
বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঢাকা-পঞ্চগড় রেলপথের দূরত্ব ৬৩৯ কিলোমিটার। এটিই দেশের সবচেয়ে দূরত্বের ট্রেনসেবা। সরেজমিনে দেখা যায়, ১০টা ২ মিনিটে ৩ নম্বর প্ল্যাটফরমে আসে একতা এক্সপ্রেস। থামার সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিটি কোচের দরজার সামনে প্রায় গোটা ৩০ জনের ভিড় সৃষ্টি হয়। ট্রেনের ভেতরে যেসব যাত্রী ছিল, তারা নামতেই পারছিল না। কেউ কেউ চেষ্টা করছিল জানালা দিয়ে উঠতে। পাঁচ মিনিটের মধ্যে পুরো ট্রেনে মানুষে ভর্তি হয়ে যায়। এর পরও অনেকে দাঁড়িয়ে থাকে দরজায়। প্রতিটি কোচের বিপরীতে ২৫ শতাংশ দাঁড়িয়ে যাওয়ার টিকিট দেওয়ার কথা থাকলেও প্রতিটি কোচে অন্তত ৩০-৪০ জন দাঁড়িয়ে ছিল।
প্রতিটি ট্রেন ঢাকায় ঢোকার পর অন্তত এক ঘণ্টা সময় পায় ক্লিনিং ও ওয়াটারিংয়ের জন্য। একতা এক্সপ্রেস ৭০৬ নম্বর ট্রেনটির সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে ঢাকায় থাকার কথা ছিল। তবে ট্রেনটি ২ ঘণ্টা ১০ মিনিট দেরিতে আসায় সেই সুযোগ আর পায়নি বলে জানায় রেল কর্তৃপক্ষ।
একতা এক্সপ্রেসের যাত্রী নুরুজ্জামান বলেন, ‘এই ট্রেন মিস করলে আমার বাড়ি যেতে অনেক সময় লাগে এবং অনেক টাকা খরচ হয়। যেভাবেই হোক ট্রেনে থাকলে বাড়ি যাওয়া যাবে। দূরের রাস্তা, ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি যাই সব সময়।’
আসিফ খান নামে এক যাত্রী বলেন, ‘ভাই টিকিট পাইনি, কিন্তু বাড়ি তো যেতে হবে। টিকিট না পাওয়ায় এভাবেই বাদুড়ঝোলা হয়ে যাওয়ার রিস্ক নিছি। আল্লাহ ভরসা, বাড়ি পৌঁছে যাব।’