মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় শ্বশুরবাড়ি থেকে এক নারীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই নারী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন আহম্মেদ ফকিরের স্ত্রী।
নিহতের পরিবারের বলছে, কয়েকবার যৌতুক দেওয়ার পরও আরও যৌতুকের জন্য ওই নারীকে শ্বাসরোধে হত্যার পর ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। শ্বশুরবাড়ির লোকজন বলছে, ওই নারী আত্মহত্যা করেছেন।
আজ বুধবার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাজমুল হাসান বলেন, ‘এখনো পর্যন্ত এ ঘটনায় ওই নারীর পরিবার থেকে কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ওই নারীর নাম—তনিমা চৌধুরী চৈতী (২২)। ডাসার উপজেলার পূর্ব মাইজপাড়া গ্রামের সেলিম চৌধুরীর মেয়ে। চৈতী কালকিনি সৈয়দ আবুল হোসেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।
নিহতের পরিবার বলছে, প্রায় ১১ মাস আগে ছাত্রলীগ নেতা শাহীন আহম্মেদ ফকিরের সঙ্গে বিয়ে হয় চৈতীর। বিয়ের পর যৌতুকের জন্য চৈতীকে চাপ দিতে থাকেন শাহীন ও তাঁর পরিবারের লোকজন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরেও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। সন্ধ্যায় শাহীনের নিজ ঘরের বৈদ্যুতিক ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় চৈতীকে দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নেয়।
এ বিষয়ে চৈতীর মামা আইনজীবী মো. সেলিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শাহীনকে কয়েকবার যৌতুক দেওয়া হয়েছে। আবারও সে যৌতুকের টাকা চেয়েছিল। আমার ভাগনি চৈতীকে যৌতুকের জন্য হত্যা করা হয়েছে। তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। আমরা এই ঘটনার বিচার চাই। শাহীনের উপযুক্ত শাস্তি চাই।’
এ দিকে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা শাহীন আহম্মেদ ফকিরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এ বিষয়ে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তবে তাঁর মা শাহিনুর বেগম বলেন, ‘আমার ছেলের বউ আত্মহত্যা করেছে।’
এ ঘটনায় মাদারীপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হোসেন অনিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কালকিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিন ফকিরের স্ত্রী মারা যাওয়ার কথা শুনেছি। কিন্তু শাহিনের স্ত্রীর পরিবার থেকে কেউ কিছু বলেনি। তবে শাহিন যদি অপরাধ করে থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’