বরেণ্য আবৃত্তিশিল্পী ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন কবি, সাহিত্যিক, রাজনৈতিক ব্যক্তি, নাট্যজনসহ সর্বস্তরের মানুষ। হাতে ফুল আর চোখের জলে তাঁর প্রতি ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন তাঁরা।
আজ শনিবার বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানান সর্বস্তরের মানুষ। শ্রদ্ধা জ্ঞাপন শেষে শোকর্যালির মাধ্যমে মরদেহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে নেওয়া হয়। সেখানে বাদ জোহর জানাজা নামাজ হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে হাসান আরিফের ছোট বোন রাবেয়া রওশন তুলি বলেন, ‘আমার ভাই আর বজ্রকণ্ঠে আবৃত্তি করবেন না। আমার স্বপ্নবাজ ভাই স্বপ্ন দেখেছিলেন করোনা থেকে ভালো হয়ে বঙ্গবন্ধুর বীরগাথা নিয়ে একশত আবৃত্তি শিল্পীর সমন্বয়ে একটি প্রযোজনা মঞ্চস্থ করবেন। দেশের আবৃত্তি শিল্পীদের কাছে আবেদন তার সেই ইচ্ছাটি যেন পূরণ হয়।’
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশে সংস্কৃতিচর্চা, বিশেষ করে কবিতাচর্চা, আবৃত্তিশিল্পের চর্চাকে জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে আজীবন বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী আবৃত্তিশিল্পী, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফের অবদান অসামান্য।’
সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস বলেন, ‘তিনি দেশের বরেণ্য আবৃত্তি শিল্পী ছিলেন। ব্যক্তিগত ভোগবিলাস আনন্দের কথা ভুলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তাকে এত অল্প সময়ের মধ্যে বিদায় দিতে হবে আমরা কখনও ভাবিনি।’
হাসান আরিফ দীর্ঘদিন ফুসফুসের রোগে ভুগছিলেন। করোনায় আক্রান্ত হলে গত বছরের শেষ দিকে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। তিনি দীর্ঘদিন একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গতকাল শুক্রবার (১ এপ্রিল) দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে রাজধানীর বাংলাদেশ চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসান আরিফ শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর।
এ দিকে চিকিৎসা গবেষণার জন্য দান করে গেছেন হাসান আরিফ। বিষয়টি নিশ্চিত করে হাসান আরিফের দীর্ঘদিনের সহকর্মী রেজওনুল কবির সুমন বলেন, ‘২০১৩ সালে আরিফ ভাই নিজেই তাঁর মরদেহ চিকিৎসার জন্য দান করার কথা লিখিতভাবে বলে গেছেন। প্রথমে তাঁর পরিবার আপত্তি করলেও পরে মতামত দিয়েছে। তিনি মরদেহ দানের বিষয়ে লিখিত দেওয়ার সময় আমি এবং আমাদের আরও এক সদস্য উপস্থিত ছিলাম।’