চট্টগ্রামে জাল-জালিয়াতি করে গ্রাহকের এফডিআরের ১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা আত্মসাতে দুদকের মামলায় সাবেক এক ব্যাংক কর্মকর্তাকে ১৪ বছর কারাদণ্ড এবং বিভিন্ন অঙ্কের জরিমানা করেছেন আদালত। একই মামলায় আরও দুই আসামিকে ১০ ও ৮ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মুনসী আব্দুল মজিদ আসামিদের উপস্থিতিতে এই রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের চান্দগাঁও শাখার সাবেক প্রায়োরিটি ব্যাংকিং ম্যানেজার মো. ইফতেখারুল কবির, ডবলমুরিং থানাধীন পূর্ব মাদারবাড়ী এলাকার মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে আব্দুল মাবুদ ও নোয়াখালী সোনাইমুড়ী থানার আবুল কাশেমের ছেলে জাকির হোসেন বাপ্পী।
আদালতে দুদকের পিপি অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মুজিবুর রহমান বলেন, ‘আসামি ইফতেখারুল কবিরকে দণ্ডবিধির ৬ ধারায় মোট ১৭ বছরের কারাদণ্ড এবং বিভিন্ন অঙ্কের জরিমানা করা হয়েছে। তবে ১৮৯৮ সালের কার্যবিধির ৩৫ ধারা মোতাবেক আসামিকে সর্বোচ্চ সাজা ১৪ বছর কারাভোগ করতে হবে। একই মামলায় আসামি আব্দুল মাবুদকে ১০ বছর কারাদণ্ড এবং আসামি জাকির হোসেনকে ৮ বছর কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। এ ছাড়া তাঁদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’
মামলা সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আলী করিম নামে এক গ্রাহকের এফডিআরের ১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। গ্রাহক নিয়মিত এফডিআরের টাকা জমা দিলেও অভিযুক্ত ব্যক্তিরা অ্যাকাউন্ট না খুলে ওই টাকা আত্মসাৎ করেন। ২০১৬ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে এই টাকাগুলো আত্মসাৎ করা হয়। ইস্টার্ন ব্যাংক কর্মকর্তা আসামি ইফতেখারুল কবির নিজের সৃজনকৃত প্যাড, সিল ও জাল স্বাক্ষরের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় এফডিআরের রসিদ ওই গ্রাহককে সরবরাহ করতেন। আসামি ইফতেখারুল আটটি চেকের মাধ্যমে এবং আসামি আব্দুল মাবুদের মালিকানাধীন জুলেখা ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল ও জাকির হোসেনের মালিকানাধীন লবিবা ট্রেডিং—এ দুটি চেকের মাধ্যমে টাকাগুলো তুলে আত্মসাৎ করা হয়।
ঘটনাটি ধরা পড়ার পর ২০১৯ সালে ৩ অক্টোবর ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের পক্ষ থেকে দুদক বরাবরে একটি অভিযোগ দাখিল করা হয়। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুদক চট্টগ্রাম-১-এর উপসহকারী পরিচালক মো. ফখরুল ইসলাম মামলা করেন। ২০২০ সালে ১১ নভেম্বর দুদকের তদন্ত প্রতিবেদনে আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯ / ৪২০ / ৪৬৭ / ৪৭১ / ১০৯ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়।