মিজানুর রহমান (২৭), তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ফিজিক্যাল অ্যাডুকেশন অ্যান্ড স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী। একই শিক্ষাবর্ষের অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস ছেড়েছেন দুই বছর আগে। কিন্তু স্পোর্টস সায়েন্সের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন এখনো শেষ হয়নি।
মিজানুর রহমানদের মতো একই অবস্থা বিভাগের অন্য শিক্ষাবর্ষেরও। পরীক্ষা নিতে কর্তৃপক্ষকে বারবার বলেও কোনো সুরাহা পাননি তাঁরা। তাই সেশনজট থেকে মুক্তির জন্য আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা।
আজ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন ফটক আটকে বিক্ষোভ করেন তারা। এ সময় শিক্ষার্থীরা কাফনের কাপড় মাথায় বেঁধে জট থেকে মুক্তির দাবি জানান।
এতে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অনেকটা অচল হয়ে যায় পুরো বিশ্ববিদ্যালয়। একই সঙ্গে শহরগামী সাঁটল ট্রেনও আটকে দেয় শিক্ষার্থীরা। পরে সহ-উপাচার্যের আশ্বাসে বিকেল ৫টার দিকে ফটক খুলে দেওয়া হয়।
তাদের দাবি, বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ করে তাদের জট নিরসনের স্থায়ী সমাধান করতে হবে। পাশাপাশি অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রণয়ন করে নিয়মিত পরীক্ষা নিতে হবে। ক্লাসরুম সংকট নিরসন করতে হবে।
মিজানুর রহমান নামে ওই শিক্ষার্থী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘২০১৫-১৬ সেশন থেকে আমাদের ডিপার্টমেন্ট (বিভাগ) চালু হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো শিক্ষক নেই, নির্দিষ্ট ভবন নেই। শিক্ষক সংকটের জন্য আমরা দীর্ঘ সেশনজটে আটকে আছি। আট বছরেও এখনো কোনো ব্যাচ বের হতে পারেনি।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল মনসুর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শিক্ষক পাইনি। গেস্ট টিচার তো–স্থায়ী টিচারের মতো কাজ করেন না। স্থায়ী শিক্ষক থাকলে বিভাগের সংকটগুলো কাটানো যেত। বিভাগ চালু হলেও স্থায়ী কোনো বিল্ডিং ছিল না। স্থায়ী ক্লাস রুমের বিষয়টা হুট করে বললেই আমরা বাস্তবায়ন করতে পারব না। বিষয়টা প্রক্রিয়াধীন আছে। আশা করি, অতি শিগগিরই সব সমস্যার সমাধান হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে বলেন, ‘উপাচার্য মহোদয় বলেছেন, আগামীকাল শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি যাবে। সেশনজট নিরসনে আমরা স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ দেব। এত দিন এই বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা চূড়ান্ত না হওয়ায় শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। আমরা সবগুলো সমস্যা ধাপে ধাপে সমাধান করব। তাদের সমস্যাগুলো সমাধানে আমরা বিভাগের সভাপতি ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসে রোড ম্যাপ তৈরি করব।’