হোম > সারা দেশ > চট্টগ্রাম

সুড়ঙ্গপথ হাজারো মানুষের সেতুবন্ধন

আকাশ আহমেদ, রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম)

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পোমরা ইউনিয়নের পশ্চিম পোমরা এলাকায় পাহাড়ের ভেতর দিয়ে একটি সুড়ঙ্গ পথ দুটি এলাকার মানুষের মাঝে তৈরি করেছে সেতুবন্ধন। দুই পাহাড়ের মাঝের এই সরুপথ দিয়ে সুদীর্ঘকাল ধরে চলাচল করছেন চারটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। স্থানীয়দের কাছে সরুপথটি সুড়ঙ্গঢালা নামে পরিচিত।

আদিকাল থেকেই পশ্চিম পোমরা নবাবীপাড়া ও বড়ঘোনা এলাকার পাহাড়ি পথে প্রাকৃতিকভাবে এই সুড়ঙ্গপথের সৃষ্টি। দুই পাহাড়ের ভেতর দিয়ে সৃষ্ট এই সুড়ঙ্গপথের দৈর্ঘ্য প্রায় আধা কিলোমিটার। পথটি খুবই সরু ও আঁকা-বাঁকা। যার প্রস্থ আনুমানিক দেড় ফুট। কোথাও কোথাও এক ফুট কিংবা এরচেয়েও কম। 

সুড়ঙ্গপথের একদিক থেকে কেউ আসলে অপর দিকে যাওয়া যায় না। তাই যাওয়ার সময় এই এলাকার মানুষ মুখে শব্দ করে করে চলাচল করেন। এই পথে শুধু মানুষ নয়, চলাচল করে গৃহপালিত গরু-ছাগলও। যাওয়া আসার পথে পাহাড়ের দুই পাশে চোখে পড়ে বিভিন্ন বিলুপ্ত প্রজাতির গাছ। 

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত পাহাড়, তার মাঝে এই সুড়ঙ্গ। সব মিলিয়ে পর্যটন সম্ভাবনাময়ী বৈচিত্রময় এই সুড়ঙ্গটি হতে পারে পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় ও দর্শনীয় স্থান।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার প্রবেশদ্বার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে এক কিলোমিটার পূর্বদিকে এলে সত্যপীর মাজারের বিপরীতে সড়কপথে কিছুদূর এগোলেই বড়ঘোনা গ্রাম। গ্রামের পূর্বপাশে সারি সারি পাহাড়। পাহাড়ের পাদদেশে রয়েছে পশ্চিম পোমরার নবাবীপাড়া গ্রাম। এই গ্রামের সঙ্গে বড়ঘোনা এলাকার মানুষের সড়ক পথে চলাচল করতে হলে সত্যপীর মাজার এলাকা থেকে আরও আধা কিলোমিটার পূর্ব দিকে ঘুরে আসতে হয়। সব মিলিয়ে দুই এলাকার মানুষের সড়ক পথে চলাচলের দুরত্ব ৩ কিলোমিটার।

কিন্তু চাষাবাদসহ জীবনযাপনের সবকিছু এক গ্রামের সঙ্গে অপর গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই দীর্ঘপথের সমস্যা সমাধানে স্থানীয় এলাকাবাসীরা আবিষ্কার করেন এই সুড়ঙ্গপথের। 

সুড়ঙ্গের ভেতরে ঢুকলেই নীরব-নিস্তব্ধ গা ছম ছম পরিবেশ। সামনের দিকে এগোলেই ওপরের খোলা আকাশ সংকুচিত হয়ে যায়। দুই পাহাড়ের ভেতর দিয়ে আঁকা-বাঁকা এই পথে নতুন কেউ গেলে ভয়ে শিউরে উঠবে। দর্শনীয় এই সুড়ঙ্গপথের বাইরে এলে দেখা মিলবে প্রাকৃতিক বিলুপ্ত প্রায় বিভিন্ন উদ্ভিদের। এ ছাড়া দুই পাহাড়ের মাঝ বরাবর এই সুড়ঙ্গ পাহাড়ের সঙ্গে সমতলের মিতালি। সবমিলিয়ে নৈসর্গিক এক ভুবন এই সুড়ঙ্গঢালা এলাকা। এই সুড়ঙ্গপথে বড়ঘোনা এলাকার মানুষ নবাবীপাড়া এবং নবাবীপাড়া এলাকার মানুষ বড়ঘোনা এলাকায় নিয়মিত আসা-যাওয়া করে কৃষিকাজসহ নিজেদের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাজের সেতুবন্ধন সৃষ্টি করেছে।

স্থানীয় আবদুর রশিদ (৮০) বলেন, বৃটিশ আমল থেকেই আমরা এই পথে চলাচল করে আসছি। সুড়ঙ্গটি আগে আরও সরু ছিল। তবে চলাচল করতে করতে এটি এখন বড় হয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আলমগীর রণি তালুকদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, সুদীর্ঘকাল থেকে প্রাকৃতিকভাবে এই সুড়ঙ্গপথের সৃষ্টি। চমৎকার পাহাড়ি পরিবেশে আঁকা-বাঁকা এই সুড়ঙ্গপথে এগোলেই শরীর শির শির করা মোহনীয় এক অনূভূতি পাওয়া যায়। অতুলনীয় সৌন্দর্যমণ্ডিত এই সুড়ঙ্গটি অজপাড়াগাঁয়ে থাকায় সকলের নজরে আসেনি। বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির উদ্ভিদের সঙ্গে এই পথে প্রাকৃতিক একটি পাহাড়ি ঝরনা আশপাশের ৫ গ্রামের মানুষের পানির চাহিদা মেটাত। এই ঝরনায় আগের মতো স্রোতধারা না থাকলেও এখনো পানির ধারা নিয়মিত বয়ে যায়। যা স্থানীয় কৃষকরা চাষাবাদে ব্যবহার করে। 

সুড়ঙ্গ দেখতে আসা মুহাম্মদ আলী ও মোহাম্মদ ইলিয়াছ নামে দুই দর্শনার্থী বলেন, প্রাকৃতিক এই সুড়ঙ্গ পথ যে কত চমৎকার হতে পারে তা এখানে না আসলে বোঝা যাবে না। পাহাড়ের সঙ্গে এলাকার সৌন্দর্যকে কাজে লাগিয়ে সুড়ঙ্গকেন্দ্রিক একটি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুললে অনেক বিখ্যাত পর্যটনকেন্দ্রও এটার কাছে হার মানবে।

মিরসরাইয়ে গাড়ির ধাক্কায় ভ্যানচালক নিহত

আনিসুল ইসলামের গ্রামের বাড়িতে হামলা-অগ্নিসংযোগ

চট্টগ্রামে ভারতীয় হাইকমিশন ও মিডিয়া ভবনে নিরাপত্তা জোরদার

বান্দরবানে সাবেক পার্বত্যমন্ত্রী বীর বাহাদুরের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

সীতাকুণ্ডে কাভার্ড ভ্যানের চাপায় ব্যবসায়ী নিহত

গ্রেপ্তার নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার থানায় সেলফি: অব্যাহতির খবর পেয়ে কনস্টেবল অসুস্থ

চট্টগ্রামে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনে ইটপাটকেল নিক্ষেপ, আটক ১২

হান্নান মাসউদকে ফেসবুকে হুমকি

হাদির মৃত্যুর খবরে নওফেলের বাসায় অগ্নিসংযোগ, ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ

বাহিনী নির্মূলে প্রয়োজনে চরমপন্থা অবলম্বন করতেও দ্বিধা করব না: সিএমপি কমিশনার