ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে বিদেশে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি বাতিলে জড়িত থাকার অভিযোগে আব্দুল্লাহ আল জুনায়েদ (২১) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম পুলিশের (সিএমপি) কাউন্টার টেররিজম বিভাগ। গতকাল শুক্রবার তাঁকে আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় সিএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) মাহমুদা বেগম গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানান।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ওই যুবককে বগুড়া জেলার সদর উপজেলার ঠনঠনিয়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার আব্দুল্লাহ আল জুনায়েদের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলায়। তিনি বাবা-মায়ের সঙ্গে বগুড়ায় থাকেন। বগুড়ায় সরকারি আজিজুল হক কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাসের পর ঢাকার উত্তরায় একটি বেসরকারি ইনস্টিটিউটে অ্যাভিয়েশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হন। সেখানে এক সেমিস্টার শেষ হওয়ার পর পড়ালেখা ছেড়ে দিয়ে পরে বগুড়ায় চলে আসেন।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি নগরীর খুলশী থানায় জুনায়েদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের একটি সরকারি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী মামলা করেন। ওই মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে কম্পিউটার সিস্টেমের মাধ্যমে ক্ষতিসাধন, ডিজিটাল প্রতারণা, ভীতি প্রদর্শন ও হ্যাকিংয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মামলার বাদী শিক্ষার্থী গত ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি কলেজে বৃত্তিসহ ভর্তির সুযোগ পান। ১১ ফেব্রুয়ারি ‘Drake For a reason’ নামের একটি ফেসবুক পেজে তাঁর বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিকর ও ভিত্তিহীন তথ্য পোস্ট করা হয়, যেখানে তাঁকে প্রতারণার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়। পরদিন যুক্তরাষ্ট্রের ওই কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁর ভর্তি বাতিল করে।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, জুনায়েদ ওই শিক্ষার্থীর ভর্তিসংক্রান্ত তথ্য ই-মেইল আইডি হ্যাক করার মাধ্যমে অথবা ল্যাপটপে বেআইনি প্রবেশের মাধ্যমে সংগ্রহ করেন। একইভাবে তাঁর ছবিও হাতিয়ে নেন। এরপর তাঁকে নিয়ে ফেসবুকে বিভ্রান্তিকর পোস্ট করেন। পরে জুনায়েদ ওই ফেসবুক পোস্টেই শিক্ষার্থীকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের জন্য বলেন, যাতে তিনি আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারেন।
জুনায়েদ ফেসবুক পেজের মাধ্যমে আরও দুটি পোস্ট দিয়ে জানান, তাঁর কাছে ইংল্যান্ড-আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভর্তির সুযোগ পাওয়া ৩০০ থেকে ৪০০ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর তথ্য আছে। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে তিনি বিদেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ও সংশ্লিষ্ট দূতাবাসে অভিযোগ দেওয়ার হুমকি দেন। এসব পোস্টে তিনি ‘কারও প্রতি দয়ামায়া দেখাবে না’, ‘বাংলাদেশকে কাঁদিয়ে ছাড়বে’-এ ধরনের মন্তব্যও করেন।
কাউন্টার টেররিজম ইউনিট সূত্র জানায়, জুনায়েদের কাছ থেকে ঘটনায় ব্যবহৃত ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল তাঁকে চট্টগ্রামে এনে আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করা হয়। আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বর্তমানে জুনায়েদ কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের হেফাজতে রয়েছেন।