ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়ে বরগুনার তাইফা (৮) নামে এক শিশু মারা গেছে। এ দুর্ঘটনায় তার বাবা বশির দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আজ শুক্রবার সকালে বরগুনা জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. হাবিবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বশির বরগুনা সদর উপজেলার ৩ নম্বর ফুলঝুরি ইউনিয়নের রোডপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর মেয়ে তাইফার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় লঞ্চটি বরগুনার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ে। উদ্ধার হওয়া লঞ্চযাত্রীরা জানান, ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীর মাঝখানে পৌঁছালে হঠাৎ লঞ্চটিতে আগুন ধরে যায়। জীবন বাঁচাতে অনেকেই নদীতে লাফিয়ে সাঁতরে তীরে ওঠে। এ ঘটনায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৩৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
লঞ্চ থেকে প্রাণে বেঁচে ফেরা সোনিয়া বেগম (২৫) নামের এক যাত্রী কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, লঞ্চে আগুন লাগার সময় তিনি ইঞ্জিনরুমের ওপরে দোতলার ডেকে অবস্থান করছিলেন। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে ডেক গরম হয়ে চারিদিক ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। এরপর লঞ্চের সঙ্গে বাঁধা দড়ি বেয়ে ছোট ছেলেকে নিয়ে নিচে নামেন তিনি। এরপর নদীতে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতরে তীরে ওঠেন। তবে তাঁর মা রেখা বেগম এবং পাঁচ বছরের বড় ছেলে জুনায়েদ সিকদার এখনো পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছে।
এদিকে সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ নামক লঞ্চে আগুন লাগার ঘটনায় দগ্ধ ৭০ জনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার ভোর ৫টা থেকে সকাল ১০টার মধ্যে তাদের ভর্তি করা হয়।
আহতদের বেশির ভাগই ঝালকাঠি হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শেবাচিমের চিকিৎসক মো. আনিসুজ্জামান। তিনি জানান, ভর্তি রোগীদের মধ্যে সাতজন শিশু রয়েছে। তাদের মধ্যে তিন শিশুকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
আনিসুজ্জামান বলেন, ‘আহত নারী-পুরুষ ও শিশুদের হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আহতদের বেশির ভাগেরই শরীরের বিভিন্ন স্থান দগ্ধ হয়েছে।’