হোম > নারী

মাসে আয় ৫৫ হাজার টাকা

আয়শা সিদ্দিকা আকাশী, মাদারীপুর

আত্মীয়স্বজন বা প্রতিবেশীর বাড়িতে অনুষ্ঠান হলে নিজ উদ্যোগে রান্না করে যেতেন তিনি। বাড়ির রান্না তো ছিলই। আর এখন রান্না করেই তিনি স্বাবলম্বী হয়েছেন। মাদারীপুর শহরের কুকরাইল এলাকার রেবেকা সুলতানা বলাকার গল্পটা সংক্ষেপে এমনই। তাঁর প্রথম আয় ছিল মাত্র ৯০ টাকা। কিন্তু এখন প্রতি মাসে তিনি আয় করেন ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকা। সংসারের অর্ধেক খরচ মেটান রান্না করা খাবার বিক্রির আয়ের টাকার।

মাদারীপুর শহরের কুকরাইল এলাকার আবদুল গফুর ব্যাপারীর মেয়ে রেবেকা সুলতানা বলাকা। আট ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট তিনি। ডানপিটে স্বভাবের হলেও রান্না করতে ভালোবাসতেন ছোটবেলা থেকে। 

১৯৮৮ সালে বাবা মারা যান। এরপর ব্যবসায়ী ও ব্যাংকার বড় ভাই মো. দেলোয়ার হোসেনের ঢাকার বাসায় মা মনোয়ারা বেগমের সঙ্গে চলে যান বলাকা। সে সময় ভাই ছিলেন অবিবাহিত। তাই রান্নার কাজটা মাকেই করতে হতো। বলাকা মায়ের রান্না দেখে কৌশল শিখে ফেলেন। ২০০০ সালে বলাকার বিয়ে হয় মাদারীপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের কলাবাড়ি এলাকার এসএম বিপু হকের সঙ্গে।

সে সময় তাজন নেছা কল্লোল শিশু বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার কারণে শহরের কুকরাইল এলাকার বাসায় থাকা শুরু করেন পরিবার নিয়ে।  
২০২০ সালের দিকে হঠাৎ চাকরি হারান বিপু। সে সময় মাদারীপুরের একটি হাসপাতালে স্টোরকিপারের চাকরি নেন বলাকা। সে চাকরির বেতনে তিন সন্তানের পড়াশোনার খরচসহ সংসার চালানো বেশ কষ্টকর হয়ে পড়ে তাঁর জন্য। সে সময় সহকর্মীদের কথামতো ফেসবুকে ‘বলাকা’স ফুড কর্নার’ নামে একটি পেজ খুলে খাবার বিক্রির চেষ্টা করেন। প্রথম দিন মাত্র ৯০ টাকায় বিক্রি হয় সেই খাবার। এরপর নিজের পেজে ধীরে ধীরে বিভিন্ন খাবারের ছবি ও ভিডিও পোস্ট দিতে শুরু করেন তিনি। বিক্রি বাড়তে শুরু করে। এ সময় খাবার ডেলিভারি দেওয়ার কাজ শুরু করেন তাঁর স্বামী বিপু। ঘরোয়া পরিবেশে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার রান্নার বিষয়টি বলাকাকে পরিচিত করে তোলে দ্রুত।

বলাকা এখন মাদারীপুরের ঐতিহ্যবাহী কাজীর ভাত, বিভিন্ন ধরনের ভর্তা, ইলিশসহ বিভিন্ন মাছের ভাজাসহ তরকারি, বিরিয়ানি, পোলাও, সাদা ভাত, মাংস, শাকসবজি, পিঠা, পায়েস, সেমাই, জর্দা, পুডিং, হালুয়া, আচারসহ বিভিন্ন ধরনের খাবার রান্না ও বিক্রি করছেন। সেই সঙ্গে তাঁর সাবেক কর্মস্থলের সহকর্মীসহ বিভিন্ন হাসপাতাল ও অফিসে কর্মরত মানুষেরা তাঁর খাবার কিনছেন। এ ছাড়া তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খাবার সরবরাহ করেন। 

প্রথম দিকে বিপু হক স্ত্রীর এসব পাগলামিকে খুব একটা পাত্তা দিতেন না। কিন্তু এখন তিনি সার্বক্ষণিক সঙ্গী হিসেবে বলাকাকে সহযোগিতা  করে চলেছেন সব প্রতিকূলতা ছাপিয়ে। বলাকা-বিপু দম্পতির বড় ছেলে ফারদিন হক গণবিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন। আর ছোট দুই ছেলে মাদারীপুরে নবম ও দশম শ্রেণিতে পড়ছে। ছেলেরাও মায়ের কাজে সহায়তা করে পড়াশোনার পাশাপাশি।­

রোকেয়াকে ‘মুরতাদ’ বলা রাবি শিক্ষকের অপসারণ চায় মহিলা পরিষদ

ল্যানসেটের গবেষণা: শৈশবে ১০০ কোটি মানুষ যৌন সহিংসতার শিকার

মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় জীবনের গল্প

যৌতুক দাবি ও গ্রহণ করা এবং যৌতুকের জন্য চাপ দেওয়া দণ্ডনীয় অপরাধ

মোটরবাইকপ্রেমী নারীদের যাত্রা

কবি বাবার উদ্ভাবক কন্যা

জুলাই অভ্যুত্থানে বেগম রোকেয়া ছিলেন প্রেরণা হয়ে: নাহিদ ইসলাম

যৌনকর্মীদের মানবাধিকার সুরক্ষায় রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব নিশ্চিতের দাবি সংহতির

দিলরুবা হক মিলি: বনরক্ষী এক নারীর গল্প

অতীতের আলো, বর্তমানের অন্ধকার