হোম > নারী

ইফতারের জন্য ঘরে তৈরি খাবার বিক্রি করেন তাঁরা

রমজান মাস মানেই খাবারের বিচিত্র আয়োজন। এই রমজানে অনেকে পরিবারের মানুষদের নিয়ে ভালো সময় কাটাতে ইফতারের আয়োজন করেন বাড়িতে। বন্ধুবান্ধব কিংবা অফিসেও থাকে ইফতার নিয়ে নানান আয়োজন। অনেকে খাবার অর্ডার করেন নামী রেস্টুরেন্ট থেকে; আবার অনেকে চান বাড়ির তৈরি খাবার। বর্তমানে অনেকে পেশা হিসেবে ফুড ডেলিভারির ব্যবসা বেছে নিয়েছেন। এমন উদ্যোক্তাদের বেশির ভাগই নারী। যাঁদের মধ্যে কেউ ছিলেন গৃহিণী আবার কেউ করতেন চাকরি। নিজের বাসার রান্নাঘরকেই বানিয়ে নিয়েছেন অফিসকক্ষ। এমনই দুজন নারী জিনাত ফেরদৌস মায়ামিমি চৌধুরী

আফরোজা রহমান, ঢাকা

মান বজায় রেখে যত দিন সম্ভব ব্যবসাটা চালিয়ে যাব

সব সময় কিছু করার ইচ্ছা থাকলেও তা হয়ে ওঠেনি। কিছুটা আর্থিক সংকটে পড়ার পর রান্না করা খাবার বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন জিনাত ফেরদৌস মায়া। একদিকে আর্থিক সংকট, অন্যদিকে চাকরির বয়স নেই। তাই জিনাত শুরু করেন রান্না করা খাবার বিক্রির ব্যবসা।

২০১৮ সালের জুলাই মাস থেকে যাত্রা শুরু হয় তাঁর মমস টাচ কিচেনের। জিনাত বলেন, ‘খাবারের ব্যবসায় ঝুঁকি অনেক বেশি। খুবই সেনসিটিভ ব্যবসা এটি। বাজার করা থেকে শুরু করে রান্না কিংবা ডেলিভারি—প্রতিটি ধাপই গুরুত্বপূর্ণ।’

এই রমজান মাসের পুরোটা সময় ইফতারের অর্ডার নিয়ে সেগুলো তৈরি করে সময়মতো গ্রাহকের হাতে পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছেন জিনাত। তাঁর অফিস হয়ে ওঠা রান্নাঘর থেকে খুব যত্নে খাবার তৈরি হয়ে চলে যায় গ্রাহকের টেবিলে। বাজার করা, রান্না থেকে শুরু করে প্যাকিং—সবই তিনি করেন নিজ হাতে। ডেলিভারির জন্য বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হয়, যাতে ধুলাবালুর সংস্পর্শে না আসে। সে জন্য ব্যবহার করেন ডাবল লেয়ার ব্যাগ। কখনো কখনো খুব চাপ হয়ে গেলে কাছাকাছি থেকে আসা ডেলিভারি তিনি নিজেই দিয়ে আসেন। এতে গ্রাহকদের সঙ্গে সরাসরি দেখা ও কথা বলার সুযোগ হয়।

স্বাভাবিকভাবে রোজার এ সময় অর্ডার বেশি থাকে। এ বছর রমজানে গত বছরের তুলনায় বিক্রি বেশি বলে জানান জিনাত।

এ পর্যন্ত এক দিনে তিনি সর্বোচ্চ ১২০ জনের খাবার তৈরি করেছেন। জিনাত জানিয়েছেন, রমজানের সময় কঠিন বিষয় হলো, ডেলিভারির লোক পাওয়া মুশকিল।

জানতে চাইলাম তাঁর কাছে, এ ব্যবসায় তো এখন প্রতিযোগিতা অনেক। সেটি বিবেচনায় আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী? জিনাত জানালেন, মান বজায় রেখে যত দিন সম্ভব, ব্যবসাটা চালিয়ে যাবেন তিনি।

মিমি চৌধুরী

আমি রান্না করতে পছন্দ করি

২০১৯ সাল থেকে খাবারের ব্যবসা করছেন মিমি চৌধুরী। স্বামী আর ১৬ বছর বয়সী ছেলের অনুপ্রেরণায় তিনি শুরু করেছিলেন মিমি’স রসুইঘর। মা আর বড় চাচির কাছে রান্না শিখেছেন ধীরে ধীরে। মিমি বলেন, ‘আমি রান্না করতে পছন্দ করি।’ ঝুঁকি মাথায় নিয়েও ব্যবসাটা শুরু করেছেন বলে হাল ছাড়তে চান না তিনি।

মিমি জানালেন, এবারের রমজানে তাঁর বিক্রি বেশ ভালো। পুরোনো গ্রাহকেরা তো আছেনই, যুক্ত হয়েছেন নতুন অনেক ক্রেতা। তবে এ সময় খাবার তৈরির ক্ষেত্রে মিমি এক বিচিত্র সমস্যায় পড়েন। লোক পাওয়া নয়; বরং তাঁর কাছে কঠিন হয়ে দাঁড়ায় খাবারে লবণ আর ঝালের অনুপাত। রোজা রাখার কারণে ঝাল ও লবণের স্বাদ বোঝা কঠিন। আবার আন্দাজমতো এসব উপকরণ দিতে গেলে অনেক সময় স্বাদের হেরফের হতে পারে। এ ভেবে বেশ উৎকণ্ঠায় থাকেন তিনি।

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার পাশাপাশি মিমি রান্নার ব্যবসা করেন। ভাবছেন, ধীরে ধীরে সেটিই হবে তাঁর আয়ের মূল উৎস। মিমি একা এই কাজ করেন না, তাঁর সঙ্গে আছেন বেশ কয়েকজন নারী। বেশ কিছু মেয়ের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। যাঁরা ভালো রান্না করেন আবার ফ্রোজেন ফুডও ভালো তৈরি করেন। কিন্তু সন্তান লালনপালনসহ বিভিন্ন কারণে নিজেরা বাইরে গিয়ে কাজ করতে পারেন না। সেই মেয়েদের সুযোগ দিয়ে তাঁদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করে চলেছেন মিমি।

ধীরে ধীরে মিমির ব্যবসার পরিসর বাড়ছে। অফিসে বিভিন্ন খাবার পাঠানোর পাশাপাশি তিনি বিয়ে, জন্মদিনসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খাবার সরবরাহ করছেন। তৈরি করছেন বিভিন্ন ফলের আচার। এর গ্রাহকদের বেশির ভাগই বিদেশি।

মিমি চৌধুরীর এখন একমাত্র চাওয়া—চাকরি ছেড়ে নিজের ব্যবসা আরও সম্প্রসারণ করা। সঙ্গে নেবেন তাঁর মতো আরও যাঁরা খাবার নিয়ে বিভিন্ন কাজ করতে চান, তাঁদের। তারপর একটি বড় ক্যাটারিং ব্যবসা শুরু করবেন এই জাদুর শহর ঢাকায়।

রোকেয়াকে ‘মুরতাদ’ বলা রাবি শিক্ষকের অপসারণ চায় মহিলা পরিষদ

ল্যানসেটের গবেষণা: শৈশবে ১০০ কোটি মানুষ যৌন সহিংসতার শিকার

মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় জীবনের গল্প

যৌতুক দাবি ও গ্রহণ করা এবং যৌতুকের জন্য চাপ দেওয়া দণ্ডনীয় অপরাধ

মোটরবাইকপ্রেমী নারীদের যাত্রা

কবি বাবার উদ্ভাবক কন্যা

জুলাই অভ্যুত্থানে বেগম রোকেয়া ছিলেন প্রেরণা হয়ে: নাহিদ ইসলাম

যৌনকর্মীদের মানবাধিকার সুরক্ষায় রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব নিশ্চিতের দাবি সংহতির

দিলরুবা হক মিলি: বনরক্ষী এক নারীর গল্প

অতীতের আলো, বর্তমানের অন্ধকার