হোম > ল–র–ব–য–হ

হাতের তালুতে জায়গা হয় যে বানরের

ইশতিয়াক হাসান

পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট বানর পিগমি মারমোসেট এটা হয়তো আমাদের কারও কারও জানা। কিন্তু এটি কতটুকুন হয়, এটা কী জানেন? যদি বলি আপনার হাতের তালুতে অনায়াসে জায়গা হয়ে যাবে তার কিংবা হাতের একটা আঙুল ধরে সে ঝুলে থাকতে পারবে, তাহলে! পিগমি মারমোসেটদের বেলায় দুটোই সত্য।

ছোট্ট এই বানরদের কথা প্রথম জানতে পেরেছিলাম তিন গোয়েন্দার ভীষণ অরণ্য বইটি পড়ে, যেখানে আমাজনের গহিন অরণ্যে অভিযানে গিয়েছিল তিন গোয়েন্দা মানে—কিশোর, রবিন ও মুসা। বই পড়তে পড়তে তাদের সঙ্গে আমিও যেন হরিয়ে গিয়েছিলাম রহস্যময় সেই অরণ্যে। তখনই পরিচয় ছোট্ট এই বানরদের সঙ্গে। শুরুতে বিশ্বাস করতে মন চাইছিল না, এত ছোট বানরও আছে।

একটি প্রাপ্তবয়স্ক পিগমি মারমোসেটের উচ্চতা হয় গড়ে পাঁচ ইঞ্চি। অবশ্য এর লেজটা অনেক সময়ই শরীর থেকে লম্বা হয়। জন্মের সময় ওজন হয় মোটে ১৫ গ্রাম, প্রাপ্তবয়স্ক একটি বানরের গড় ওজন ১১৯ গ্রাম। অর্থাৎ মাঝারি আকারের একটি আপেলের চেয়ে কম ওজন এদের। তবে অবাক করা ব্যাপার হলো, পুরুষ বানরদের চেয়ে মেয়ে বানরদের ওজন একটু বেশি হয়। ছোট আকারের কারণে এরা ফিঙ্গার মাঙ্কি নামেও পরিচিত। 

দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন নদীর উজানের দিকে আমাজনের জঙ্গলের পেরু, ইকুয়েডর, কলম্বিয়া, বলিভিয়া আর ব্রাজিল অংশে দেখা মেলে এদের। তবে গায়ে-গতরে ছোট হলে কী হবে, লাফ দেওয়ায় মহা ওস্তাদ এসব বানর। আমাজনের গহিনে, যেখানে সূর্যের আলো কমই পৌঁছায়, সেখানে তরতরিয়ে ওঠে যায় উঁচু সব গাছে। আর এই ছোট্ট দেহটা এক লাফে কতটা দূরত্ব পেরোয় শুনবেন? ৫ মিটার বা সাড়ে ১৬ ফুট।

বেশির ভাগ বানর জীবন ধারণ করে ফল আর গাছের পাতা খেয়ে। তবে আকারে যেমন অন্যদের থেকে আলাদা, পিগমি মারমোসেটদের খাওয়ার ম্যানুও আলাদা। এদের প্রিয় খাবার গাছের আঠা ও রস। ধারালো নখের সাহায্যে বাকল খুঁড়ে এই উদ্ভিদ রস সংগ্রহ করে বানরেরা। 

গাছে বাস করায় দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি আরেকটি বিশেষ ক্ষমতা অর্জন করেছে এরা। তা হলো, মাথাটাকে অন্তত ১৮০ ডিগ্রি ঘোরাতে পারে এরা। আকারে ছোট হলে জঙ্গলে টিকে থাকা কঠিন। পিগমি মারমোসেটদের শত্রু অর্থাৎ এদের শিকার করে এমন প্রাণীর অভাব নেই। এদের মধ্যে আছে সাপ, শিকারি পাখি এমনকি ছোট জাতের বুনো বিড়াল। নিজেদের রক্ষা করার একমাত্র উপায় হলো দল বেঁধে থাকা। সাধারণত একটি দলে ৯টি পর্যন্ত পিগমি মারমোসেট থাকে। হামলাকারীর চারপাশে ঘিরে গোটা দলের সদস্যরা চিৎকার করতে থাকে, কাজ না হলে পাল্টা আঘাত হানে। তবে মানুষ যখন আক্রমণ করে, তখন এই দলগত শক্তিও কোনো কাজে আসে না। 

পিগমি মারমোসেটদের এই ছোট, আদুরে চেহারাই এদের জন্য বড় বিপদ ডেকে এনেছে। পোষা প্রাণী হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠায় এদের দাম চোরাই বাজারে গিয়ে ঠেকেছে ৪ হাজার ডলার বা সোয়া চার লাখ টাকার বেশিতে। পোষা প্রাণী হিসেবে যেসব পিগমি মারমোসেট বিক্রি হয়, এর একটি বড় অংশ বুনো অবস্থায় ধরে আনা হয়। তারপর এদের বন্দিদশা বরণ করে নিতে হয়। শিকারিরা অনেক ক্ষেত্রেই বাচ্চা চুরির সময় মা পিগমি মারমোসেটকে মেরে ফেলে। এভাবে প্রভাব পড়ে গোটা দলটির ওপর। অনেক জায়গাতেই একে পোষা তাই নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

বৃক্ষচর জীবনে মানিয়ে নিলেও আরও অনেক বানরের মতো পিগমি মারমোসেটদেরও গাছ থেকে পড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে নতুন জন্ম নেওয়া শিশুদের বেলায় এটা বেশি ঘটে। আর আমাজনের গহিন অরণ্যের উঁচু কোনো বৃক্ষ থেকে এতটুকুন একটা শরীর নিচে পড়লে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা যে কম তা বুঝতেই পারছেন!

সূত্র: সিটিজিএন ডট কম, গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস, ফ্যাক্ট অ্যানিমেল ডট কম

২৩ লাখ টাকার ‘ডিম’ গিলে ফেললেন যুবক, এক সপ্তাহ পর যেভাবে উদ্ধার করল পুলিশ

১৯ হাজার ডলারের ‘ডিম’ গিলে যুবক কারাগারে

জরায়ুহীন হয়ে জন্মেছিলেন, তাঁর হয়ে সন্তান জন্ম দিলেন প্রিয় বন্ধু

বিড়ালের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ ঘোষণা’ করল নিউজিল্যান্ড সরকার

৮০টি সেলাই ও ২ ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে বাঁচল একটি কোবরা

দুই টার্কি মুরগিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ক্ষমা’ করলেন ট্রাম্প

মৃত মায়ের বেশ ধরে তাঁর পেনশনের টাকা তুলছিলেন ছেলে

আদালতে প্রিয় শিল্পীর পরচুলা পরে, গান বাজিয়ে চাকরি হারালেন বিচারক

প্রয়াত মায়ের চিলেকোঠায় পুরোনো কমিক বই, বিক্রি হলো ৯১ লাখ ডলারে

ক্যাটসতাম্বুল: যে শহরে পথের রাজা মানুষ নয়, বিড়াল