পরশু এল ক্লাসিকোর শেষ বাঁশি বাজার পর করমর্দনের জন্য দানি কারভাহালের দিকে ছুটে গেলেন লামিনে ইয়ামাল। ক্লাবে তাঁরা প্রতিপক্ষ হলেও জাতীয় দলে তাঁরা সতীর্থ। তাই সৌজন্য দেখাতে গিয়েছিলেন ইয়ামাল। কারভাহাল তা গ্রহণ করলেন না, উল্টো ইয়ামালকে বলেন, ‘তুমি বেশি কথা বলো।’
এল ক্লাসিকোর আগেই রিয়ালকে চোর দাবি করে আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসেন ইয়ামাল। শেষটা জুড়েও তাঁকে ঘিরে আলোচনা। কারভাহালের সঙ্গে সেই আলাপের পরই ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের সঙ্গে রীতিমতো যুদ্ধে জড়াচ্ছিলেন তিনি। দুই দলের খেলোয়াড়েরা পরিস্থিতি সামাল না দিলে ভিন্ন কিছুরই দেখা মিলত। অবশ্য এল ক্লাসিকোয় এমনটা ঘটা স্বাভাবিকই।
ঘরের মাঠে বার্সেলোনাকে ২-১ গোলে হারিয়ে ৪ ম্যাচ পর এল ক্লাসিকোয় জয়ের স্বাদ পেয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। ইয়ামালকে বোতলবন্দী করে রাখার কাজটা নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করেছে তারা। বল ছুঁয়েছেন ৭৯ বার, কিন্তু গোল মুখে শট নিতে পারেননি একবারও। এমন পারফরম্যান্সে বার্সা উইঙ্গারের আত্মবিশ্বাস তলানিতে চলে গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। সম্প্রতি মাঠের চেয়ে মাঠের বাইরের ঘটনা নিয়েই বেশি আলোচিত তিনি। বিতর্কিত মন্তব্য তো রয়েছেই। সেই সঙ্গে ‘গার্লফ্রেন্ড’-কাণ্ডেও বেশ কয়েকবার খবরের শিরোনাম হয়েছেন।
তবু তা নিয়ে যেন গা ছাড়া ভাব; মাঠের বাইরের শৃঙ্খলাকে যেন পাত্তাই দেন না। বিচলিত হন না সমালোচনায়ও। এসব মানা যেত, যদি মাঠে নিজেকে নিংড়ে দিতে পারতেন ইয়ামাল। ক্লাবেও এমন কেউ নেই, যে তাঁর ১৮ বছর বয়সের উদ্যমী মনোভাবকে সঠিক জায়গায় কাজে লাগাতে পারেন। কেউ তাঁকে আয়নায় তাকাতে বাধ্য করতে পারছেন না।
পায়ের কারিকুরিতে ফুটবলবিশ্বকে মোহাচ্ছন্ন করে ইয়ামাল কি তাহলে হারিয়ে যাবেন বিশৃঙ্খলার অতল গহ্বরে। তাঁর জন্য তো আদর্শ হতে পারেন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী কিলিয়ান এমবাপ্পেও। অল্প বয়সে তারকার তকমা পাওয়া এমবাপ্পে ব্যক্তিগতভাবে কাটাচ্ছেন নিজের সেরা সময়। পরশু এল ক্লাসিকোয় গোল করে হয়েছেন নায়কও। তারকাখ্যাতির নেতিবাচক রাস্তায় কখনো পা বাড়াননি তিনি, যেমনটা করছেন ইয়ামাল; যেন মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ।
বাজে সময় সবারই আসে। ইয়ামালের কাছে তা অজানা কিছু নয়। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে তাঁর সঙ্গে সেদিন যা হলো, এর জবাব হয়তো নিশ্চয় দিতে চাইবেন তিনি। ক্যাম্প ন্যুতে সেই প্রতিশোধ নেওয়ার আগে নিজেকে কতটুকু শোধরাতে পারবেন ইয়ামাল, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই।