আবেগ-উন্মাদনা ছাপিয়ে ক্রিকেট এখন পুরোপুরি বাণিজ্যিক। তবু এটি এখনো ‘ভদ্রলোকের খেলা’ হিসেবে পরিচিতি।
বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসিও প্রতি বছর এর স্বীকৃতি দিয়ে থাকে ‘স্পিরিট অব ক্রিকেট’ পুরস্কারের মাধ্যমে। এবার বিশেষ এই সম্মাননা পেলেন নিউজিল্যান্ডের ড্যারিল মিচেল। আবুধাবিতে গত ১০ নভেম্বর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে দৃষ্টান্ত সৃষ্টিকারী সিদ্ধান্তের পুরস্কার দেওয়া হয়েছে ২৮ বছর বয়সী ব্যাটিং অলরাউন্ডারকে।
ক্রিকেটীয় মূল্যবোধের ক্ষেত্রে প্রতিপক্ষ, নিজ দল ও অধিনায়ক, আম্পায়ারদের ভূমিকা ও ক্রিকেটের ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা বিবেচনায় নেওয়া হয়।
ম্যাচে ইংল্যান্ড আগে ব্যাট করে ১৬৬ রান তুলেছিল। রান তাড়া করতে নেমে দলকে জয়ের দিকে ভালোভাবেই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন ড্যারিল মিচেল ও জিমি নিশাম। ১৮ তম ওভারে বল করতে আসেন আদিল রশিদ। প্রথম বলে নিশাম দ্রুত এক রান নিতে চেয়েছিলেন। সেটি প্রত্যাখ্যান করেন নন-স্ট্রাইক প্রান্তে থাকা মিচেল। আদিল যখন নিশামের শট ঠেকাতে যাচ্ছিলেন, তখন তাঁর সামনে এসে পড়েছিলেন মিচেল। ফলে আদিল বলটি ধরতে পারেননি।
সেদিন ধারাভাষ্য দেওয়ার সময়ই মিচেলের আচরণের প্রশংসা করেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক নাসের হুসেইন। শেষ পর্যন্ত মিচেল অবশ্য নিউজিল্যান্ডকে ফাইনালে তুলেই ছেড়েছেন। ৪৭ বলে ৭২ রানের হার না মানা ইনিংস খেলে ম্যাচসেরাও হন তিনি।
নিউজিল্যান্ডের চতুর্থ ক্রিকেটার হিসেবে আইসিসি ‘স্পিরিট অব ক্রিকেট’ পুরস্কার জিতলেন মিচেল। এর আগে সম্মাননা পেয়েছিলেন ড্যানিয়েল ভেট্টরি, ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও কেন উইলিয়ামসন।
বিশেষ সম্মাননা পেয়ে স্বাভাবিকভাবেই খুশি মিচেল। নিজের অনুভূতি জানিয়েছেন এভাবে, ‘ক্রিকেটকে খুব ভালোবাসি বলেই খেলি। অবশ্যই সবাই জিততে চাই। তবে সেটা হওয়া উচিত ক্রিকেটের মূল্যবোধের পরিপন্থী কিছু করা থেকে বিরত থেকে। স্পিরিট অব ক্রিকেটের গুরুত্ব অবশ্যই আছে। বিশেষ করে যারা ভবিষ্যতে খেলবে, এই উদাহরণ তাদের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’
ক্রিকেটীয় স্পিরিট অক্ষুণ্ন রেখে নিউজিল্যান্ড যেভাবে খেলে থাকে, তাতে মিচেলও গর্বিত, ‘আমরা সব সময় নিজের সামর্থ্য দিয়ে জিততে চাই। বড় ম্যাচেও কোনো বিতর্কে জড়াতে চাই না।’