সিরিজের দুই ম্যাচ শেষ, তবু আলোচনায় মিরপুরের কালো উইকেট। আইসিসির ম্যাচ অফিশিয়ালরা মিরপুরের পিচ নিয়ে কী রিপোর্ট করেন, সেটা হবে দেখার বিষয়। যে উইকেটে টার্ন আছে, আছে অসমান বাউন্স, কখনো বল আসে ধীরে, কখনো ভিন্ন গতিতে। এখানে দুই ম্যাচ খেলার পর দুই দলের কাছেই এটা পরিষ্কার—অলিখিত ফাইনাল হয়ে যাওয়া শেষ ওয়ানডেতে স্পিনের বিপক্ষে যারা ভালো করবে, সিরিজ জিতবে তারাই।
মিরপুরের কালো উইকেটে স্পিনারদের বিপক্ষে রান পেতে ব্যাটারদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। আর তা এতটাই, দ্বিতীয় ওয়ানডেতে উইন্ডিজ দলে জাস্টিন গ্রিভসের মতো পেস বোলিং অলরাউন্ডার থাকলেও তাঁকে দিয়ে একটি বলও করায়নি ক্যারিবীয় দল। ৫০ ওভারই করেছেন স্পিনাররা। পরে বাংলাদেশও কি কম গেছে! স্পিনাররা বেশি সফল ও বেশি কিপটে ছিলেন বলে ১০ ওভারের বোলিং কোটাও পূরণ করা হয়নি কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমানের।
প্রতিপক্ষকে ঘায়েলে আজও দুই দলেরই প্রধান অস্ত্রই হবে স্পিন। ‘ফাইনাল’ জয়ের মন্ত্রও এখন এই একটাই—স্পিনের বিপক্ষে লড়েই রান তোলো, এমন বেশি রান তোলো যেন প্রতিপক্ষের কাছে তা দুরতিক্রম্য হয়ে যায়। হাতের তালুর মতো চেনা মাঠে, চেনা কন্ডিশনে স্বাগতিক হিসেবে বাংলাদেশেরই এগিয়ে থাকার কথা। কিন্তু দ্বিতীয় ওয়ানডেতে চাপের মধ্যে থেকেও যেভাবে ম্যাচ টাই করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং যেভাবে সুপার ওভারে হারিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশকে, সেটা স্থানীয় কন্ডিশনের সঙ্গে তাদের পুরোপুরি মানিয়ে নেওয়ার কথাই বলে। তাদের খণ্ডকালীন বোলার আলিক অ্যাথানেজ ১০ ওভার বল করে ২ উইকেট নিয়েছেন মাত্র ১৪ রান খরচায়।
জিততে জিততে হেরে যাওয়া দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ব্যাটাররা অনেক বেশিই ডট বল খেলেছেন। ২১৩ রান এই উইকেটে খারাপ ছিল না। কিন্তু সবচেয়ে দৃষ্টিকটু ছিল বাংলাদেশ ইনিংসের ৩০০ বলের ৬২.০৪ শতাংশই ছিল ডট বল! স্ট্রাইক রোটেশনে উন্নতি করতে না পারলে সিরিজে ঘুরে দাঁড়ানো ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে জেতাটা কঠিন হয়ে যাবে মেহেদী হাসান মিরাজদের।
কেন এত বেশি ডট বল বাংলাদেশ ইনিংসে? দ্বিতীয় ওয়ানডে শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন সৌম্য সরকার। বলেছেন, ‘এই উইকেটে শট খেলা খুবই কঠিন। দেখেছেনই তো, খুব বেশি সিঙ্গেল নেওয়া যায়নি, ওভারপ্রতি বাউন্ডারিও ছিল খুবই কম।’
দুই দল মিলিয়ে এই সিরিজে এখন পর্যন্ত ফিফটি করেছেন মাত্র দুজন—বাংলাদেশের তাওহীদ হৃদয় ও শাই হোপ। এই তথ্যও বলছে, মিরপুরের কালো উইকেটে বড় ইনিংস খেলা সত্যিই কঠিন। এই ‘কঠিনে’র সঙ্গে লড়াই করেই দুই ম্যাচের দুটিতেই খণ্ডকালীন ব্যাটার রিশাদ হোসেন দেখিয়ে দিয়েছেন, এই পিচেও স্পিনের বিপক্ষে কত সহজে খেলা যায়! ২ ম্যাচে ৬৫ রান নিয়ে তিনিই স্বাগতিকদের পক্ষে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। তাঁকে দেখেও কি সিরিজ-নির্ধারণী ফাইনালে উদ্দীপ্ত হবেন না সাইফ-শান্তরা!