আকবর আলীর নেতৃত্বে ২০২০ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়াটাই বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে বৈশ্বিক আসরে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। সবশেষ দুই যুব এশিয়া কাপেও শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ।কিন্তু ছেলেদের জাতীয় দলের ক্যাবিনেটটা একেবারে শূন্য। বিশ্বকাপ তো দূরে থাক, তিন তিনবার এশিয়া কাপ ফাইনালে উঠেও শিরোপা জিততে পারেনি বাংলাদেশ।
এক সময়ের প্রিয় সংস্করণ ওয়ানডেতেও বাংলাদেশের কতটা ভগ্নদশা, সেটা ছোট একটা পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট। ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে শুরু করে এ বছরের অক্টোবর পর্যন্ত পাঁচ ওয়ানডে সিরিজের মধ্যে কেবল একটিতে জিতেছে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মেহেদী হাসান মিরাজের নেতৃত্বে বাংলাদেশের এই সিরিজ জয় একরকম স্বস্তি বয়ে এনেছে। ছেলেদের ক্রিকেটের সমান্তরালে বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটাররাও ব্যস্ত ওয়ানডে বিশ্বকাপে। নিগার সুলতানা জ্যোতির নেতৃত্বে ভারতে চলমান নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ৬ ম্যাচে কেবল ১ ম্যাচ জিতে ২ পয়েন্ট পেয়েছে।
যে পাঁচ ম্যাচ বিশ্বকাপে হেরেছে, সেগুলোর মধ্যে ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল বাংলাদেশের। ভুলের খেসারত দিয়ে নারী ক্রিকেট দল বিশ্বকাপে সেমির দৌড় থেকে ছিটকে গেছেন জ্যোতিরা। গুলশান ইয়ুথ ক্লাবে আজ এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। তাঁর আশা, মিরাজদের আগেই বিশ্বকাপ জিতবেন জ্যোতিরা। বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘অবশ্যই ছেলেদের ক্রিকেট ভালো করবে। কিন্তু আমার মনে হয় ছেলেদের আগে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হবে। সেই সম্ভাবনাটা আমাদের আছে। আমাদের যে চলমান বিশ্বকাপ চলছে, ছোট ছোট ভুল না করলে আমরা হয়তো পাঁচটা ম্যাচ জিততাম। সেমিফাইনাল খেলার অন্যতম এক প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারতাম।’
এ বছরের মে মাসে বুলবুল সভাপতি হয়েছিলেন ফারুকের পরিবর্তে। তখন কুইক টি-টোয়েন্টি ইনিংস খেলার আশার কথা শুনিয়েছিলেন বুলবুল। হাতে নিয়েছিলেন ‘ট্রিপল সেঞ্চুরি’ এক প্রোগ্রাম। পরবর্তীতে ৬ অক্টোবর বিসিবি নির্বাচনের পর চার বছরের মেয়াদে বোর্ড প্রধানের দায়িত্ব পেয়েছেন। আজ গুলশান ইয়ুথ ক্লাবের এক অনুষ্ঠানে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘আমাদের এই চার বছরের মেয়াদে আমাদের কয়েকটা লক্ষ্যের মধ্যে একটা হচ্ছে যে বাংলাদেশে শুধু আমরা ক্রিকেটার তৈরি করব না। ক্রিকেটারের মাধ্যমে ভালো নাগরিক তৈরি করব। সেজন্য ট্রিপল সেঞ্চুরির অধীনে একটা প্রোগ্রাম চালাচ্ছি। যেটার ভিত্তি হচ্ছে ট্রিপল সেঞ্চুরি। শতভাগ বিশ্বাস, শতভাগ রিচ, শতভাগ পারফরম্যান্স—এটার ওপর ভিত্তি করে আমাদের ক্রিকেটের উন্নয়নে পরিকল্পনা করতে যাচ্ছি।’
আইসিসির এলিট প্যানেলে বাংলাদেশের একমাত্র আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন। আইসিসি ইভেন্ট তো বটেই, ভারত-ইংল্যান্ড, ভারত-অস্ট্রেলিয়ার মতো সিরিজেও আম্পায়ারিং করেছেন। সৈকতের মতো আম্পায়ার তৈরি হওয়ার পেছনে বুলবুল কৃতিত্ব দিয়েছেন ইফতেখার রহমান মিঠুকে। বর্তমানে মিঠু বিসিবির আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন। মিঠু প্রসঙ্গে বুলবুল বলেন, ‘এখানে আছেন ইফতেখার রহমান মিঠু। বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় স্তম্ভ। তার সময়ে একজন এলিট আম্পায়ার হয়েছেন। আমাদের ছয় আম্পায়ার, যাঁদের মধ্যে আছেন তিন আম্পায়ার। তাঁরা আইসিসির প্যানেলভুক্ত আম্পায়ার।’
বুলবুল আজ গুলশান ইয়ুথ ক্লাবে বিসিবির বর্তমান সহসভাপতি ফারুক আহমেদ, বোর্ড পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিমসহ অনেকের নামই উল্লেখ করেছেন। তিনি যখন ছোট ছিলেন, সেই সময়ে দ্বিতীয় বিভাগের ক্রিকেটে গুলশান ইয়ুথ ক্লাব বারবার রানার্সআপ হতো বলে আজ জানিয়েছেন। বিসিবি সভাপতি জেলা, উপজেলায় ক্রিকেট ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি সেরা প্রতিভাগুলো বয়সভিত্তিক দল ও জাতীয় দলে নিয়ে আসবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।