ভারতের বৈশ্বিক শিরোপার প্রসঙ্গ এলে ২০১৩ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির কথা চলে আসে আপনাআপনি। কারণ ১০ বছর আগেই সর্বশেষ আইসিসি ইভেন্টের শিরোপা জিতেছে ভারতীয়রা। এরপর থেকে তাদের গল্পটা হতাশার। যতবার আইসিসি ইভেন্টের নক আউট পর্বে উঠেছে, ভারতকে ফিরে আসতে হয়েছে বারবার। আরও এক ফাইনালে যখন ভারত উঠেছে, তখন ঘুরেফিরে আসছে অতীত পরিসংখ্যান।
ভারতের ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠার সঙ্গে যেন ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের একটা মিল খুঁজে পাওয়া যায়। সংস্করণ ও ভেন্যু দুটোই ছিল ভিন্ন। ৯ বছর আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হয়েছিল এশিয়ার আরেক দেশ বাংলাদেশে। তখন ভারতের অধিনায়ক ছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। ধোনির নেতৃত্বাধীন ভারত সেই টুর্নামেন্টে বেশ দাপটের সঙ্গে পারফরম্যান্স করেছিল। সরাসরি যে ৮ দল দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল, তার একটি ছিল ভারত। সব মিলিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠেছিল ১০ দল। গ্রুপ ১ ও গ্রুপ ২—এ দুই গ্রুপে ছিল ৫টি করে দল। গ্রুপ-২-এ ভারতের প্রতিপক্ষ ছিল বাংলাদেশ, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজ। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে হারিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করেছিল ভারত।
পাকিস্তানের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ, বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া—এই তিন দলকে হেসেখেলে হারিয়ে দেয় ভারত। যেখানে উইন্ডিজ, বাংলাদেশ দুই দলের বিপক্ষেই রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি ভারতের এ দুই ব্যাটারই ফিফটি করেছেন। এরপর রবীচন্দ্রন অশ্বিনের ঘূর্ণিতে পরাস্ত হয়ে অস্ট্রেলিয়া গুটিয়ে যায় ৮৬ রানে। অজিদের বিপক্ষে ৭৩ রানের জয়ে ম্যাচ-সেরা হয়েছিলেন অশ্বিন। ৪ ম্যাচের ৪টিতে জিতে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়ে ভারত চলে যায় সেমিফাইনালে। সেমিতে দক্ষিণ আফ্রিকার দেওয়া ১৭৩ রানের লক্ষ্যে ধোনির ভারত জিতেছে ৬ উইকেটে ৫ বল হাতে রেখে। ৪৪ বলে ৭২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে ম্যাচ-সেরা হয়েছেন কোহলি।
৯ বছর পর ভারতের মাঠে হওয়া এবার ওয়ানডে বিশ্বকাপের শুরুটা হয়েছে দুর্দান্ত। ১০ ম্যাচের ১০ টিতে জিতে ফাইনালে উঠেছে রোহিতের নেতৃত্বাধীন ভারত। কোহলি, রোহিত এবার আরও দুর্দান্ত। ৩ সেঞ্চুরিতে ৭১১ রান করে এবারের বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক কোহলি। একই সঙ্গে তা কোনো নির্দিষ্ট ওয়ানডে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান। ৫৫০ রান করে রোহিত আছেন রান সংগ্রাহকদের তালিকায় পাঁচে। শেষের দিকে ঝড় তুলছেন লোকেশ রাহুল, রবীন্দ্র জাদেজার মতো ব্যাটাররা। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং দিয়ে পার্থক্য গড়ে দিচ্ছেন জাদেজা। ভারতের এই বাঁহাতি স্পিনিং অলরাউন্ডার নিয়েছেন ১৬ উইকেট। আর ২৩ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি মোহাম্মদ শামি। জাসপ্রীত বুমরা ও কুলদীপ যাদব নিয়েছেন ১৮ ও ১৫ উইকেট। ৯ বছর আগের সঙ্গে এবার ভারতের ‘রোড টু ফাইনালের’ গল্প একই রকম। ছন্দে থাকা ভারত আহমেদাবাদের ফাইনালে পা হড়কায় কি না, সেটা সময়ই বলে দেবে।