সবার শেষে দল ঘোষণা করলেও বিশ্বকাপ থেকে সবার আগে বিদায় নিচ্ছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের কাছে আজ ৭ উইকেটের হারে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়েছে সাকিব আল হাসানদের।
অথচ টুর্নামেন্টের শুরুটা জয় দিয়ে করেছিল বাংলাদেশ। পরে টানা ৫ হারে সেমিফাইনালে খেলার সম্ভাবনা আগেই শেষ হয়েছিল। আজকের ম্যাচসহ বাকি ২ তাই নিয়মরক্ষার। তবে এই নিয়মরক্ষার ম্যাচেই চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলার ভাগ্য নির্ভর করছে বাংলাদেশের।
আগামী চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলতে হলে পয়েন্ট তালিকায় ৮ এর মধ্যে থাকতে হবে বাংলাদেশকে। সেই লক্ষ্যে খেলতে নেমে আজ ব্যাটিং ইনিংসেই যেন হার নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের। পাকিস্তানের বিপক্ষে যে টেনেটুনে মাত্র ২০৪ রান করতে পেরেছে।
আধুনিক সংস্করণের ওয়ানডেতে এই লক্ষ্যে খুবই ছোট। পাকিস্তানকে আটকাতে হলে তাই শুরুতেই প্রতিপক্ষের ব্যাটিং অর্ডার ধসিয়ে দিতে হতো। কিন্তু বাংলাদেশের বোলাররা ধসিয়ে দেওয়ার বিপরীতে পাকিস্তানের উদ্বোধনী জুটির কাছে বেধড়ক মার খেয়েছে। এ ম্যাচ দিয়ে আবারও একাদশে সুযোগ পাওয়া ফখর জামান শুরুটা করেন। শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে থাকেন বাঁহাতি ব্যাটার। পরে তাঁর সঙ্গে যোগ দিতে থাকেন আবদুল্লাহ শফিকও।
উদ্বোধনী জুটিতেই ১২৮ রান যোগ করেন শফিক–ফখর। সেটিও আবার ২২ ওভার শেষ হওয়ার আগেই। ফিফটি তুলে নিয়েছেন দুজনই। তবে ফিফটির পর দুজনের কেউই ইনিংসকে সেঞ্চুরিতে পরিণত করতে পারেননি। শফিকের ৬৮ রানের বিপরীতে ৮১ রানে আউট হন ফখর। দুজনকেই আউট করেছেন মিরাজ।
পরে বাবর আজমকেও আউট করে পরাজয়ের ব্যবধান কমান মিরাজ। ৯ রানে মাহমুদউল্লাহকে ক্যাচ দেন পাকিস্তানের অধিনায়ক। জয়ের বাকি কাজটুকু সারেন পাকিস্তানের দুই ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ান ও ইফতিখার আহমেদ। ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন উইকেটরক্ষক ব্যাটার রিজওয়ান। আর ১৭ রানে ইফতিখার। ১০৫ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটের এই জয়ে সেমিফাইনালে খেলার সম্ভাবনা টিকে রইল পাকিস্তানের। ৭ ম্যাচে ৬ পয়েন্টে এখন ৫ নম্বরে বাবরের দল।
হাল ধরার বিপরীতে উল্টো আউট হয়ে দলকে আরও বিপদে ফেলেন মুশফিকুর রহিম। মুশফিক ৫ রানে আউট হওয়ার সময় বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় ২৩ রানে ৩ উইকেট। সেখান থেকে দলের হাল ধরেন লিটন দাস ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। চতুর্থ উইকেটে ৭৯ রানের জুটি গড়েন দুজনে। কিন্তু ৪৫ রানে লিটন আউটের পর আবারও বিপদে পড়ে বাংলাদেশ।
৫ রানের জন্য লিটন ফিফটি না পেলেও পেয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। তবে ফিফটি করার পর ইনিংসকে বড় করতে পারেনি তিনিও। ৫৬ রান করে সতীর্থর দেখানো পথেই ফেরেন অভিজ্ঞ ব্যাটার। এ ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপের একাদশে আবারও সুযোগ পাওয়া তাওহীদ হৃদয়ও বেশিক্ষণ টেকেননি। ৭ রানে আউট হন তিনি। ১৪০ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে তখন পাকিস্তানি বোলারদের সামনে ধুঁকছিল বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ তখন দুই শ রান করতে পারবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কা জেগেছিল। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ২০৪ রান করতে পারে সাকিব ও মিরাজের সৌজন্যে। ৭ম উইকেটে ৪৫ রান যোগ করেন দুজনে। ৪৩ রানে সাকিব আউটের পর দ্রুত অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। অধিনায়কের পর ২৫ রান করা মিরাজ ছাড়া আর কোনো ব্যাটার দুই অঙ্কের ঘর স্পর্শ করতে পারেনি। বাংলাদেশের শেষ ৩ উইকেটই নেন ওয়াসিম জুনিয়র। তাঁর সমান উইকেট পেয়েছেন শাহিনও।