মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথচলা শেষ হয়েছে এ বছরই। মুশফিকুর রহিম খেলছেন শুধু টেস্ট। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে এখন খেলছেন তানজিদ হাসান তামিম, তাওহীদ হৃদয়, শামীম হোসেন পাটোয়ারীর মতো তরুণেরা। কিন্তু যে সংস্করণেই খেলা হোক না কেন, ব্যাটিং ব্যর্থতায় বাংলাদেশ ভুগছে অনেক দিন ধরে।
চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে গতকাল টস জিতে আগে ব্যাটিং নিয়ে ১১.১ ওভারে ১ উইকেটে ১০৬ রান তুলে ফেলেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে শাই হোপ ও আলিক আথানাজ যেভাবে খেলছিলেন, তাতে ২০০ হওয়াটাও অসম্ভব ছিল না। তবে নাসুম আহমেদ-মোস্তাফিজুর রহমানদের অসাধারণ বোলিংয়ে উইন্ডিজ ৯ উইকেটে ১৪৯ রানে আটকে যায়। জয়ের লক্ষ্যে নেমে হাতে ৭ উইকেট নিয়ে একটা পর্যায়ে ৩ ওভারে ৩৩ রান দরকার ছিল বাংলাদেশের। এমনকি ৪৮ বলে ৬১ রান করা তানজিদ হাসান তামিম আউটের পরও ম্যাচটা স্বাগতিকদের নাগালে ছিল। কিন্তু ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে জাকের আলী অনিক, শামীমরা যদি আসা-যাওয়ার মিছিলে ব্যস্ত থাকেন, তাহলে কি জেতা সম্ভব! শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ম্যাচটা ১৪ রানে হেরেছে।
দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি হেরে এক ম্যাচ আগেই সিরিজ খুইয়েছে লিটন দাসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ। সিরিজ হারের পর সামাজিক মাধ্যমে বাংলাদেশকে নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন রুবেল হোসেন। তিনি (রুবেল) এখানে মাহমুদউল্লাহ-মুশফিকের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের নাম উল্লেখ করেছেন। নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে গত রাতে রুবেল লিখেছেন, ‘একজন মুশফিকুর রহিম, একজন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ—আজকের (গতকাল) ম্যাচে এই দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের অভাবটা খুবই অনুভব করেছি। বিশেষ করে মিডল অর্ডারে। এত সুন্দরভাবে আমরা ঘুরে দাঁড়ালাম বোলিংয়ে। তারপরও চট্টগ্রামের মতো ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে জয়টা তুলে নিতে পারলাম না। সত্যিই এটা কষ্টদায়ক।’
বাংলাদেশ গতকাল চট্টগ্রামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফিল্ডারদের কাছ থেকেও সুযোগ পাচ্ছিলেন। সাইফ হাসান, লিটন, তানজিদ তামিম, হৃদয়—এই চার ব্যাটারের ক্যাচ ফেলেছেন উইন্ডিজ ফিল্ডাররা। কিন্তু জীবন পেয়ে সুযোগগুলো সেভাবে কাজে লাগাতে পারেননি। ৩ রানে জীবন পাওয়া সাইফ হাসান আউট হয়েছেন ৫ রানে। আর ২০ রানে বেঁচে গিয়ে লিটন আউট ২৩ রানে, তানজিদ তামিম ৪৪ রানে জীবন পেয়ে ৬১ রানে বিদায়, হৃদয় ৫ রানে বেঁচে গিয়ে ১২ রানে আউট—এমনটাই ঘটেছে। রুবেল লিখেছেন, ‘চট্টগ্রামের উইকেট সব সময় ব্যাটারদের পক্ষে থাকে। তবে আজ ব্যাটিংয়ে সেই সুযোগটা নিতে পারেনি। প্রশ্নটা থেকেই যায়, ভুলটা আসলে কোথায় হচ্ছে? কেন বারবার এমন অবস্থানে গিয়েও আমরা ম্যাচ হারাচ্ছি?’
শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, নেদারল্যান্ডস, আফগানিস্তান—টানা চার সিরিজজয়ী বাংলাদেশের কাছে সুযোগ ছিল সংখ্যাটাকে পাঁচে পরিণত করার। কিন্তু ব্যাটারদের ব্যর্থতায় সেই সুযোগটা হারাল বাংলাদেশ। চট্টগ্রামে সোমবার সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে স্বীকৃত ব্যাটারদের ব্যর্থতায় লিটনের দল হেরেছিল ১৬ রানে। এবার তো লিটনরা সিরিজটাই খোয়ালেন। বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে আগামীকাল বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হবে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টি। লিটনরা নামবেন ধবলধোলাই এড়ানোর লক্ষ্যে।