হোম > মতামত > সম্পাদকীয়

নেই কাজ তো খই ভাজ

সম্পাদকীয়

বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) কার্যালয়ের সামনের খোলা জায়গায় একসঙ্গে যদি আটজনকে বেঞ্চে বসে বা দাঁড়িয়ে অলস সময় কাটাতে দেখেন, তাহলে ভুলেও ভাববেন না, তাঁরা দর্শনার্থী।

তাঁরা সেখানে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অফিস করেন! তথ্যটা অবাক করা হলেও সত্যিটা এই, সাড়ে পাঁচ মাস ধরে এভাবেই দিন কাটাচ্ছেন বিসিসির ‘অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি’ (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) বা ওএসডি হওয়া এই আটজন কর্মচারী। ১৭ নভেম্বর আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এমনটাই জানা গেছে।

ব্রিটিশ শাসনামলে তৎকালীন ভারতীয় সিভিল সার্ভিসে ওএসডির চর্চা হতো। পাকিস্তান শাসনামলেও তা বলবৎ ছিল। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরও আজ পর্যন্ত এটি চালু আছে। দেশের সংস্থাপন বা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের ওএসডি করার বিধান রয়েছে। সরকারি অন্য বিভাগ, সংস্থা বা মন্ত্রণালয়ের ক্ষেত্রেও সংযুক্ত করার বিধান রয়েছে।

সরকারি দপ্তরগুলোতে সাধারণত তাঁদেরই ওএসডি করা হয়, যাঁরা নতুন দায়িত্ব পান কিংবা পদোন্নতি পান অথচ পদ খালি থাকে না। আবার কেউ যদি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা, শৃঙ্খলাভঙ্গ, দুর্নীতি কিংবা প্রশাসনিক কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত বলে সন্দেহ করা হয়, তাহলে তদন্ত চলাকালীন তাঁকে ওএসডি করা হতে পারে। অর্থাৎ এটি একপ্রকার শাস্তিই বলা চলে। অনেক সময় রাজনৈতিক কারণে অনেকে ওএসডি হন। এ ছাড়া চাকরিরত অবস্থায় কেউ টানা তিন মাসের বেশি সময়ের জন্য প্রশিক্ষণ, উচ্চশিক্ষায় বিদেশ গমন, অসুস্থতা কিংবা চিকিৎসার কারণে ছুটি নিতে চাইলে তাঁকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করে রাখা হয়।

বিশেষ ভারপ্রাপ্ত হলেও কোনো ভারই যেন বহন করতে হয় না ওএসডিধারীদের। ওএসডি থাকাকালীন সরাসরি প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করতে হয় না, তবে তাঁদের বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা অব্যাহত থাকে। যতই কাজ না থাকুক, অফিসে গিয়ে হাজিরা ঠিকই দিতে হয় তাঁদের।

দায়িত্ব না থাকায় তাঁদের সাধারণত টেবিল-চেয়ারে সুসজ্জিত বসার জায়গা থাকে না। তাঁদের জন্য অফিস ঘর হতে পারে লাইব্রেরি বা ক্যানটিন! কিন্তু বিসিসির ওএসডি হওয়া এই কর্মচারীরা দর্শনার্থীদের মতো দিন কাটাচ্ছেন নিজ কার্যালয়ে। বিগত দিনে ওএসডি হওয়া কর্মচারীরা বসতেন বিসিসির অ্যানেক্স ভবনে। কিন্তু তাঁদের বসার জন্য নগর ভবনের প্রশাসকের দপ্তরের সামনের বেঞ্চ ছাড়া আর কোনো জায়গা নেই।

এসব না হয় তাঁরা মেনে নিচ্ছেন, কিন্তু ঠিক কী কারণে তাঁদের ওএসডি করা হয়েছে, তা আর সবার জন্য তো বটেই, তাঁদের জন্যও এক অদ্ভুত রহস্য! বরিশাল সিটির সচিব রূম্পা সিকদার যদিও আশ্বাস দিয়েছেন, তাঁদের বসার ব্যবস্থা করবেন, কিন্তু তাঁরা কেন যে ওএসডি হয়েছেন, সেই কারণ কি খুঁজে দিতে পারবেন? অন্তত এতটুকু জানার অধিকার নিশ্চয় ওএসডি হওয়া কর্মচারীদের রয়েছে।

কাজ না থাকলে কেউ খই কেন ভাজবেন, সেই সদুত্তর পাওয়া জরুরি। কারণ, না জেনে দীর্ঘদিন ওএসডি থাকা যে কেউ মানসিক চাপে অবসাদগ্রস্ত হয়ে যেতে পারেন। তা কি আমাদের কোনোভাবে কাম্য?

ইমরান খান

শাপলাপাতা মাছ

ছাদে মানুষ

উচ্চ রক্তচাপ

তফসিল, নির্বাচন ও জনগণ

ঢাকা শহর যখন মুমূর্ষু

মোবাইল কোম্পানির বাণিজ্য

চালের বস্তা

এটা কি গণতন্ত্রের ভাষা!

বাউলদের ওপর হামলা কেন