হোম > মতামত > সম্পাদকীয়

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি

সম্পাদকীয়

বলা নেই, কওয়া নেই, মোটরসাইকেলে করে এসে একটা দোকানে ঢুকে পড়ল তিন যুবক। পিস্তলের গুলি ছুড়ল তারা একজন যুবদল নেতার দিকে। মাথায়, বুকে আর পিঠে গুলি করে তারা সদম্ভে বেরিয়ে গেল। যুবদল নেতা নিথর পড়ে রইলেন দোকানের মেঝেতে। এরপর ধরাধরি করে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হলো হাসপাতালে। হাসপাতালের চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করলেন।

কারা, কোন উদ্দেশ্যে যুবদল নেতা গোলাম কিবরিয়াকে হত্যা করেছে, তার কিছু আভাস দিয়েছে পুলিশ। দীর্ঘদিন বিদেশে অবস্থানরত একজন শীর্ষ সন্ত্রাসীর সঙ্গে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও লেনদেন থেকে দ্বন্দ্বের কারণেই ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের দিয়ে কিবরিয়াকে হত্যা করানো হয়েছে।

দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। পুলিশ বাহিনীর হারানো মনোবল এখনো ফিরে আসেনি। সবখানে তারা সক্রিয় নয়। পুলিশের উপস্থিতি এখন সব ক্ষেত্রে নিরাপত্তাও নিশ্চিত করে না। কখনো পুলিশ নীরব থাকে। আবার কখনো এতটাই সক্রিয় হয়ে ওঠে যে তাদের বেসামাল মনে হয়। এহেন পরিস্থিতিতে দুর্বৃত্তরা সুযোগ খোঁজে। সুযোগ তৈরি করে নিতে পারলেই অরাজকতার জন্ম দেয়।

কী কারণে মিরপুরের পল্লবীতে ১৭ নভেম্বর বিকেলে একজন যুবদল নেতাকে হত্যা করার জন্য হেলমেট পরিহিত তিন দুর্বৃত্ত একটি দোকানে প্রবেশ করেছিল, তার কিছুটা জানা গেছে। বিচার নিশ্চয়ই হবে বলে আশা করা যায়। তবে এই বেদনাদায়ক দুর্ঘটনার সূত্র ধরে আরও অনেক প্রশ্নই মনে জেগে ওঠে।

নির্বাচনের তফসিল এখনো ঘোষণা করা হয়নি, তবু বলা যায়, দেশ এখন নির্বাচনের সড়কে উঠে গেছে। মুখে নানা কথা বললেও সব দলই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আড়ালে কেউ কেউ সমঝোতা করার চেষ্টায় লিপ্ত, এমন কথাও বলা হচ্ছে। কার সঙ্গে কে জোট করবে, তা নিয়েও রয়েছে আলোচনা। এই নির্বাচন ঘিরেও কিছু সহিংসতা হতে পারে। একই দলের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সমর্থকেরা যেমন প্রতিদ্বন্দ্বীর শক্তি কমিয়ে দেওয়ার জন্য নাশকতার আশ্রয় নিতে পারেন, তেমনি বিরুদ্ধ রাজনৈতিক দলের নেতারাও অন্য দলের শক্তিমত্তা খর্ব করার জন্য হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্র করতে পারেন। ষড়যন্ত্র শুধু রাজনীতি নিয়েই হতে পারে, এমন নয়। এলাকার আধিপত্য, চাঁদাবাজির বখরা, পেশিশক্তির প্রকাশ ঘটানোসহ নানা কারণেই ঘটতে পারে এসব হত্যাকাণ্ড। তাই কীভাবে এইসব হত্যাকাণ্ড ঠেকিয়ে দেওয়া যায়, তার পথ খুঁজে বের করতে হবে।

এখন এলাকার সাধারণ জনগণের দায়িত্ব বেড়ে গেছে। নিজ মহল্লায় কী ঘটছে, সেদিকেও দিতে হবে তীক্ষ্ণ নজর। দুর্বৃত্তপনার বিরুদ্ধে গড়ে তুলতে হবে সামাজিক প্রতিরোধ। পুলিশ বাহিনীকে হতে হবে সক্রিয়। কোনো একটি দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর সেখানে পৌঁছাতে পারার মধ্যে কোনো কৃতিত্ব নেই। দুর্ঘটনা যেন না ঘটে, সেই পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।

চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সব পক্ষকেই সহনশীল হতে হবে। একে অন্যের বিরুদ্ধে উত্তেজক কথা বলে যুদ্ধংদেহী পরিবেশ সৃষ্টি করা হলে সংকট বেড়েই চলবে।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখা এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বের একটি, এ কথা মনে রাখা দরকার।

ইমরান খান

শাপলাপাতা মাছ

ছাদে মানুষ

উচ্চ রক্তচাপ

তফসিল, নির্বাচন ও জনগণ

ঢাকা শহর যখন মুমূর্ষু

মোবাইল কোম্পানির বাণিজ্য

চালের বস্তা

এটা কি গণতন্ত্রের ভাষা!

বাউলদের ওপর হামলা কেন