বাংলাদেশের প্রাপ্তবয়স্ক জনগণের বড় একটি অংশই মনে করছেন বর্তমানে ভুল পথে চলছে দেশ। তবে দেশের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক অংশ মনে করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভালোভাবেই তাঁর কাজ করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে সরকার জনসমর্থন ধরে রাখলেও বিরোধীদের জনসমর্থনও বাড়ছে।
সম্প্রতি মার্কিন প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) সেন্টার ফর ইনসাইট ইন সার্ভে রিসার্চ (সিআইএসআর) পরিচালিত এক জরিপ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
জরিপ থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, দেশের মাত্র ৪৪ শতাংশ মানুষ মনে করেন দেশ সঠিক পথে চলছে। বিপরীতে ৫৩ শতাংশ মানুষই মনে করেন, দেশ ভুল পথে চলছে। এর বাইরে ৩ শতাংশ মানুষ এ বিষয়ে দ্বিধাগ্রস্ত বা কোনো উত্তর দেননি।
২০১৪ সালের পর প্রথমবার মতো এই জরিপে বাংলাদেশ ভুল পথে চলছে বলে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মত দিল। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বেরের জরিপে ৭৬ শতাংশ মানুষ বাংলাদেশ সঠিক পথে চলছে বলে মত দিয়েছিল।
আইআরআইয়ের এই জরিপে ১৮ বছর থেকে ৫৬ বছরের বেশি মোট ৫ হাজার লোককে বাছাই করা হয়েছিল নমুনা হিসেবে। এই ৫ হাজার জনের মধ্যে পুরুষ ২ হাজার ৬৩৩ জন এবং নারী ২ হাজার ৩৬৭ জন। অঞ্চল বিবেচনায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে গ্রামাঞ্চলের ৩ হাজার ৪৫০ জন এবং বাকি ১ হাজার ৫৫০ জন শহরের বাসিন্দা।
নির্বাচন স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হলে আগামী জাতীয় নির্বাচনে বাংলাদেশিরা ভোট দিতে আগ্রহী। উত্তরদাতাদের ৯২ শতাংশই বলেছেন যে, তাঁরা পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিতে চান। তবে এর মধ্যে ৫৭ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, তাঁরা ‘খুব সম্ভবত’ ভোট দিতে পারবেন। যাঁরা ভোট দিতে চান না, তাঁরা মূলত নির্বাচনে জালিয়াতি এবং ভোটার নিবন্ধনসংক্রান্ত সমস্যাকে ভোটদানের ক্ষেত্রে প্রধান বাধা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
জরিপের ফলাফলের ওপর মন্তব্য করতে গিয়ে আইআরআইয়ের দক্ষিণ এশিয়া চ্যাপ্টারের পরিচালক স্টিভ সিমা বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের জন্য এমন জনসমর্থন দেখা সত্যই উৎসাহজনক। এই ফলাফল আসন্ন শীতে ব্যালট বাক্সে নিজেদের সত্যিকারের পছন্দকে বাছাই করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশিদের মৌলিক আকাঙ্ক্ষার বহিঃপ্রকাশের ওপর জোর দেয়।’
উল্লেখ্য, ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট বা আইআরআই হলো—যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। যার লক্ষ্য হলো, বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে গণতন্ত্রের বিকাশের লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রকাশনা, জরিপ ইত্যাদি গবেষণামূলক কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের অধিকাংশ সদস্যই রিপাবলিকান পার্টি থেকে আসা।