হোম > জাতীয়

নিরন্নের পাশে খাবার হাতে পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ষাটোর্ধ্ব মোতাহার আলী। গত তিন দিন পেট পুরে খাবার জোটেনি। রাজধানীর মগবাজার রেলগেট এলাকায় ভিক্ষা করেন। কঠোর বিধিনিষেধ চলায় গত পাঁচ দিন পুলিশের ভয়ে ঘর থেকে বেরই হতে পারেননি। গতকাল বুধবার ক্ষুধায় শরীর আর চলছিল না। ঠিক তখনই পুলিশ খাবার হাতে দাঁড়ায় তাঁর দরজায়।

খাবার হাতে মোতাহার আলী আজকের পত্রিকাকে বললেন, পুলিশের কাছ থেকে খাবার পেয়ে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। বলেন, প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগপর্যন্ত অপেক্ষা করেন কেউ-না-কেউ এসে খাবার দিয়ে যাবে। কিন্তু এবার লকডাউনে মগবাজার রেলগেট বস্তিতে কেউই আসেনি। তাই পেট পুরে খাবারও জোটেনি। 

করোনা ভাইরাসজনিত (কোভিড-১৯) সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারঘোষিত বিধিনিষেধ বাস্তবায়ন ও রাজধানীজুড়ে দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে খাবার বিতরণ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। ডিএমপির কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলামের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে প্রতিদিন পাঁচ হাজার ছিন্নমূল, পথশিশু, সুবিধাবঞ্চিত, দিনমজুর ও অসহায় নাগরিকের মাঝে খাবার বিতরণ করছে ডিএমপি। এর ধারাবাহিকতায় রামপুরা ও মগবাজার এলাকায় দুস্থ মানুষের মাঝে খাদ্য বিতরণ করা হচ্ছে।

রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘কমিশনার স্যার যত দিন চাইবেন আমরা অসহায় এসব মানুষকে খাবার বিতরণ করে যাব। প্রতিদিন আমাদের থানায় ১০০ প্যাকেট খাবার আসে। একেক দিন আলাদা আলাদা স্থানে খাবার দিই। কিন্তু সত্যি কথা বলতে, আরও অনেকে এসে দাঁড়িয়ে থাকেন।’ 

ডিএমপি কমিশনার কার্যালয় থেকে বলছে, কমিশনারের নিজস্ব অর্থায়নে প্রতিদিন সকাল ১০টার মধ্যে ডিএমপির ৫০টি থানায় ১০০ প্যাকেট করে খাবার পৌঁছে যায়। খাবারের মধ্যে থাকে ডিমখিচুড়ি বা সবজি–ভাত–ডিম। খাবার থানায় পৌঁছানোর পর ওসিরা ঠিক করে দেন কোন এলাকায় খাবার দেওয়া হবে। সে অনুযায়ী আগেই ওই এলাকায় দুস্থ, পথশিশু, ছিন্নমূল মানুষদের জানানো হয়। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে খাবার বিতরণ করা হয়।

১৬ বছরের কিশোর ফরহাদ হোসেন। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ফরহাদ থাকে আফতাবনগরের বেদেপল্লিতে। অভাবের সংসারে দুই বেলা খাবার তার কাছে বিলাসিতা। করোনার এই সময়ে তাই এক বেলা খাবারই তার স্বপ্ন। ফরহাদের হাতে পুলিশের খাবার। পর পর তিন দিন। খাবার পেয়ে উচ্ছ্বসিত ফরহাদ জানায়, দুই মাস পর এমন ভালো খাবার খেয়েছে। প্রতিদিন এক প্যাকেট করে খাবার মায়ের জন্যও নিয়ে যেতে পেরেছে। সে পুলিশের বড়কর্তাকে ধন্যবাদ দিয়েছে।

শেরেবাংলা নগর থানা এলাকায় এসেছেন মালেকা। পাঁচ বছরের মেয়ে আছে। স্বামী রিকশাচালক। লকডাউনের মধ্যে যেটুকু আয় করেন, তা দিয়ে সংসার চলে না। পুলিশের পক্ষ থেকে খাবার দেওয়া হচ্ছে শুনে ছুটে এসেছেন। নিজের ও স্বামীর জন্য খাবার পেয়েছেন তিনি।

পল্লবী থানার ওসি পারভেজ ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কমিশনার কার্যালয় থেকে প্রতিদিন খাবার আসে। সেই খাবারের সঙ্গে আমি নিজেও থানা থেকে কিছু খাবার দিই। সাধারণত খিচুড়ি দেওয়া হয়। সবাই জানে, বেলা ১১টার সময় থানার সামনে থেকে খাবার পাওয়া যায়। অনেকেই আসে। হাসিখুশিভাবে খাবার নিয়ে যায়।’

রমনা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ‘আমরা সবার পাশে দাঁড়াতে পারব না। তবে চেষ্টা করছি যতটুকু সম্ভব।’

ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি শুনেছি, খাবার পেয়ে মানুষ অনেক খুশি হয়েছে। যত দিন লকডাউন আছে, আমি সুবিধাবঞ্চিতদের মাঝে খাবার বিতরণের চেষ্টা করব।’ 

দুদকের তদন্ত: ৭ দেশে জাবেদের আরও ৬১৫ সম্পদের সন্ধান

রক্তসাগর পাড়ি দিয়ে পুব আকাশে স্বাধীনতার সূর্য

ত্যাগ, বীরত্ব আর গৌরবের জ্বলন্ত সাক্ষী মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর

নতুন প্রত্যাশা জাতির মনে

প্রস্তাবিত পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ হবে অর্থহীন ও আত্মঘাতী: টিআইবি

ডেভিল হান্ট ২: দুই দিনে গ্রেপ্তার সহস্রাধিক, অস্ত্র উদ্ধার ৬

জাতীয়-ধর্মীয়-সামাজিক অনুষ্ঠানে নির্বাচনী বিধি মানার নির্দেশ ইসির

‘হাদির ওপর হামলা বিচ্ছিন্ন ঘটনা’—সিইসির বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিল ইসি

লালমনিরহাট বিমানবন্দর পুনরায় চালুর নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না—জানতে চেয়ে রুল

বিজয় দিবসে বঙ্গভবনের আশপাশের সড়ক এড়িয়ে চলার অনুরোধ ডিএমপির