ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে হলে অন্যান্য সবকিছুর মতো স্বাস্থ্য ব্যবস্থাও পুরোপুরি ডিজিটালে (আধুনিক) রূপান্তর করতে হবে জানিয়ে সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক বলেছেন, ‘প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে সব সময়ই সেবা পৌঁছানো কঠিন। তাই ডিজিটাল মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে এ সেবা নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর চিকিৎসার জন্য স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা ভালো। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালের ন্যায় ব্যবস্থাপনায় কিছুটা পিছিয়ে। হঠাৎ অসুস্থ হলে রোগীকে দ্রুত সময়ে কোথায় নেওয়া যেতে পারে সেটি ডিজিটাল মাধ্যমে পাওয়া যেতে পারে। নতুন ডিজিটাল হেলথ কেয়ার সিস্টেম “হেলথ বন্ধু” সেই ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছি।’
আজ শুক্রবার রাজধানীর গুলশান শুটিং ক্লাবে বিএসএফ কনভেনশন হলে হেলথ বন্ধুর ডিজিটাল হেলথ কেয়ার ইকোসিস্টেমের উদ্বোধনকালে সাবেক এই স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
রুহুল হক বলেন, ‘সাধারণ মানুষের ধারণা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পাওয়া যায় না। কিন্তু সেটি ভুল। করোনা মহামারির স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতিতে বড় ভূমিকা রেখেছে। অক্সিজেনসহ প্রয়োজনীয় অনেক কিছু হয়েছে যেটা অন্য সময়ে হয়তো এত দ্রুত হতো না। এই সময়ে আমাদের সক্ষমতা জানান দেওয়া হয়েছে যে, একদিনে এক কোটি ২০ লাখ টিকা আমরা দিতে পারি।’
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ইমেরিটাস অধ্যাপক এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, ‘করোনার সময়ে টেলিমেডিসিন সেবা যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা হারে হারে টের পেয়েছি আমরা। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে মানুষের যে প্রত্যাশা তা এখনো পূরণ হয়নি। মানুষের অসন্তোষ রয়েছে। স্বাস্থ্যসেবায় বিড়ম্বনা সেটি শুধু বাংলাদেশে নয়, পৃথিবীর বহু দেশে আছে। স্বাস্থ্যসেবা যে চলছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে সেবা পৌঁছাচ্ছে না। তাই ডিজিটাল এই সিস্টেমে যদি তাদের মাঝে সেবা পৌঁছানো যায়, তাহলেই সার্থক।’
তিনি বলেন, ‘দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, ডাক্তার, নার্স ও সেবা পাওয়া নিয়ে অনেক অভিযোগ থাকলেও উন্নতি যে হয়নি তা কিন্তু নয়। এগিয়েছে বলেই বর্তমানে গড় আয়ু বেড়েছে, মা-শিশু মৃত্যু হার কমেছে। কিন্তু স্বাস্থ্যের ভালো কাজগুলোর তুলনায় দু-একটি খারাপ কাজেরই প্রচার বেশি হয়।’
এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, ‘করোনা নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের বড় বড় দেশের তুলনায় অনেক ভালো অবস্থানে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, ভারতে লাখ লাখ মানুষ করোনায় মারা গেছে। সেসব দেশে কোটি কোটি মানুষ আক্রান্ত। সেখানে আমাদের অনেক কম। পৃথিবীর ১২১টি দেশের মধ্যে আমরা পঞ্চম। আরও এগিয়ে যেতে হবে।’