দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে ইলিশ মাছ বিদেশে রপ্তানি করতে চায় বাংলাদেশ। এ জন্য এই মাছের উৎপাদন বাড়িয়ে সবার হাতের নাগালে পৌঁছাতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহের কর্মসূচি জানাতে আজ বুধবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন করেন প্রাণিসম্পদমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ইলিশের পর্যাপ্ত উৎপাদনের মাধ্যমে দেশের সবাই যখন ইলিশের স্বাদ নিতে পারবে, তারপর বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ইলিশ রপ্তানির চিন্তাভাবনা আমাদের রয়েছে। দেশের ইলিশ সম্পদ তথা মৎস্যসম্পদ বৃদ্ধির জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।’
প্রাণিসম্পদমন্ত্রী জানান, ‘ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ, জাটকা ধরলে সর্বনাশ’ প্রতিপাদ্যে এ বছর ৩১ মার্চ থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ উদ্যাপন করা হবে।
রেজাউল করিম বলেন, জনগণের পুষ্টি চাহিদা পূরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, গ্রামীণ অর্থনীতিকে সচল রাখা এবং দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ইলিশ মাছের গুরুত্ব অপরিসীম। দেশের মোট মৎস্য উৎপাদনের ১২ দশমিক ২২ শতাংশ আসে ইলিশ থেকে। যা একক প্রজাতি হিসেবে সর্বোচ্চ। জিডিপিতে ইলিশের অবদান এক শতাংশের বেশি।
মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বের মোট উৎপাদিত ইলিশের ৮০ শতাংশের বেশি আহরিত হয় বাংলাদেশের নদ-নদী, মোহনা ও সাগর থেকে। প্রায় ৬ লাখ মানুষ ইলিশ আহরণে সরাসরি নিয়োজিত। আর ২০ থেকে ২৫ লাখ মানুষ ইলিশ পরিবহন, বিক্রি, জাল ও নৌকা তৈরি এবং রপ্তানি সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত।’
রেজাউল করিম জানান, এ বছর ইলিশের সঙ্গে সম্পৃক্ত ২০টি জেলায় জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ পালন করে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। বৃহস্পতিবার মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলায় জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহের উদ্বোধন শেষে পদ্মা নদীতে নৌর্যালী করা হবে।
এ সময় জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ চলাকালে জাটকা আহরণ, কেনা-বেচা ও খাওয়া থেকে বিরত থাকতে সবাইকে অনুরোধ জানান মন্ত্রী।
প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন বেড়ে ৫ লাখ ৬৫ হাজার টনে উন্নীত হয়েছে। উৎপাদন ও প্রাপ্যতা বাড়ায় ইলিশ মাছ সব শ্রেণিপেশার মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে এসেছে। ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর অন্যতম প্রধান অন্তরায় হচ্ছে কারেন্ট জালে নির্বিচারে জাটকা নিধন। অবৈধ জাল নির্মূলে গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে দেশের ১৭টি জেলায় বিশেষ অপারেশন চালানো হয়েছে। এ সময়ে ৮৮৪টি ভ্রাম্যমাণ আদালত তিন হাজার ৫৪৬টি অভিযান পরিচালনা করে চার হাজার ২১৭টি বেহন্দি জাল, ৪৬৯ দশমিক ৫২ লাখ মিটার কারেন্ট জাল এবং ৯৫৬২টি অন্যান্য জাল আটক করেছে।