হোম > জীবনধারা > জেনে নিন

প্লাস্টিকের পাত্র, বোতল ও স্প্যাচুলা কত দিন ব্যবহার করা নিরাপদ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­

সময় মতো না বদলালে এসব সামগ্রী থেকেই ছড়িয়ে পড়তে পারে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ। ছবি: সংগৃহীত

আমরা অনেকে রান্নাঘরের প্রতিদিনের কাজে কিছু নির্দিষ্ট জিনিসের ওপর নির্ভর করি। যেমন খাবার রাখার জন্য প্লাস্টিক পাত্র আর রান্নার সময় খাবার নাড়তে সিলিকন স্প্যাচুলা বা খুন্তি। এগুলো যেমন সহজলভ্য, তেমনি কাজেও আরামদায়ক। তবে এগুলোর ব্যবহারের একটা নির্দিষ্ট সময় থাকে।

সময়মতো না বদলালে এসব সামগ্রী থেকে ছড়িয়ে পড়তে পারে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ, যা আপনার খাবার ও স্বাস্থ্যের জন্য হতে পারে বড় বিপদ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পাত্রগুলো নিয়ম করে বদলানো দরকার। আর সবচেয়ে ভালো হলো প্লাস্টিকের পাত্র ব্যবহার না করা।

প্লাস্টিক পাত্র বদলাবেন যে কারণে

প্লাস্টিক পাত্র টেকসই হলেও চিরস্থায়ী নয়। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড অকুপেশনাল হেলথ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আন্দ্রেয়া ডে ভিজকায়া-রুইজ বলেন, ‘যখনই পাত্রে কোনো ক্ষয়, ভাঙা বা নষ্ট হওয়ার চিহ্ন দেখা যায়, তখনই তা ফেলে দেওয়া উচিত।’

বিশেষ করে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পাত্র কখনো দীর্ঘ মেয়াদে ব্যবহারের জন্য তৈরি নয়। যেমন খাবারের সঙ্গে ডেলিভারিতে পাওয়া যায়।

যেসব লক্ষণ দেখলে পাত্র ফেলে দেওয়া উচিত

দৃশ্যমান ক্ষয় বা ভাঙা: প্লাস্টিকের পাত্রে ফাটল, খোঁচা, আঁচড়, বেঁকে যাওয়া বা চটচটে ভাব থাকলে তা ফেলে দিন। এগুলোর কারণে পাত্রের গঠন নষ্ট হয় এবং পরিষ্কার করাও কঠিন হয়ে পড়ে।

দাগ ও গন্ধ: টমেটো সসের মতো কিছু দাগ ক্ষতিকর না হলেও যদি তার সঙ্গে গন্ধও থাকে, তবে সেটা পুরোনো খাদ্যদ্রব্য বা জীবাণুর উপস্থিতির ইঙ্গিত হতে পারে। এতে খাবারের স্বাদ ও নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

ঢাকনা ঠিকমতো বন্ধ না হওয়া: যদি কনটেইনারের ঢাকনা ঠিকমতো না আটকায় বা সিল বন্ধ না হয়, তবে তা খাবার নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।

মাইক্রোওয়েভ বা ডিশওয়াশারে ক্ষতি: একবার ব্যবহার উপযোগী প্লাস্টিক পাত্র মাইক্রোওয়েভ বা ডিশওয়াশারে ব্যবহার করা উচিত নয়। এতে তা গলে যেতে পারে বা বিকৃত হয়ে যেতে পারে।

এমনকি ‘মাইক্রোওয়েভ-সেফ’ বা ‘ডিশওয়াশার-সেফ’ হিসেবে বাজারজাত করা পাত্রও সময়ের সঙ্গে নষ্ট হতে শুরু করে। অতিরিক্ত তাপে প্লাস্টিক ক্ষয়ে গিয়ে মাইক্রোপ্লাস্টিক তৈরি করে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ও ক্যানসারের শঙ্কা থাকে।

কী ধরনের জিনিস সংরক্ষণ করছেন, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ

যদি আপনি কোনো সময় এই কনটেইনারে তেল, পেইন্ট বা ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ রাখেন, তাহলে তা আবার খাবারের জন্য ব্যবহার করা যাবে না। এসব ক্ষতিকর পদার্থ পাত্রে লেগে থাকতে পারে এবং তা থেকে হতে পারে খাদ্যদূষণ।

পেন স্টেট ইউনিভার্সিটির ফুড সেফটি এক্সটেনশন অ্যাসোসিয়েট মার্টিন বাকনাভেজ বলেন, ‘যদি পাত্র ঠিকমতো পরিষ্কার না করা যায়, তাহলে যেকোনো দূষণ খাবারে স্থানান্তর হতে পারে।’

কত ঘন ঘন পাত্র বদলানো উচিত

সবার জন্য একই নিয়ম নেই। আপনি কত ঘন ব্যবহার করছেন এবং কীভাবে তা রক্ষণাবেক্ষণ করছেন, তার ওপর নির্ভর করে।

নিয়মিত ব্যবহৃত পাত্র: প্রতি মাসে অন্তত একবার পরীক্ষা করুন।

মাঝে মাঝে ব্যবহৃত পাত্র: প্রতি ৩ মাসে একবার পরীক্ষা করে দেখুন।

প্রস্তুতকারকের নির্দেশিকা অবশ্যই অনুসরণ করুন।

প্লাস্টিকের পানির বোতল কত দিন ব্যবহার করা নিরাপদ

সাধারণ প্লাস্টিক বোতল: ১-২ বার ব্যবহারের জন্য। পুনর্ব্যবহার নিরাপদ নয়। কারণ, এতে ব্যাকটেরিয়া ও রাসায়নিক জমে থাকতে পারে।

দীর্ঘস্থায়ী প্লাস্টিক বোতল: ৬ মাস থেকে ১ বছর, যতক্ষণ না কোনো ক্ষতি বা বিকৃতি দেখা যায়।

কখন ফেলে দেওয়া উচিত

  • বোতলে ফাটল, বিকৃতি, দাগ বা গন্ধ দেখা দিলে।
  • প্লাস্টিকের সমতো গন্ধ ছড়াতে শুরু করলে।
  • যদি বোতল গরম বা রোদে পড়ে থাকে।
  • বোতলের মুখ বা ঢাকনায় জীবাণু জমে থাকলে এবং পরিষ্কার করেও না উঠলে।

প্লাস্টিকের বোতলের ভালো বিকল্প

স্টেইনলেস স্টিল, কাচের বোতল বা বিপিএ মুক্ত বোতল দীর্ঘস্থায়ী ও স্বাস্থ্যকর।

সিলিকন স্প্যাচুলা কত দিন ব্যবহার করা নিরাপদ

সিলিকন স্প্যাচুলা রান্নাঘরের এক অন্যতম সহকারী। উচ্চ তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে, তাই রান্নায় ব্যবহারেও ঝুঁকি কম। তবে এটিও একেবারে চিরস্থায়ী নয়।

ভালো মানের ফুড-গ্রেড সিলিকন স্প্যাচুলা: দেড় থেকে দুই বছর পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়।

কম মানের বা বেশি গরমে ব্যবহৃত: ৬ মাস থেকে ১ বছরের মধ্যে পরিবর্তন ভালো।

যেসব লক্ষণ দেখলে ফেলে দেওয়া উচিত

  • সিলিকনের রং ফিকে হয়ে যাওয়া বা পুড়ে যাওয়া
  • স্প্যাচুলা নরম হয়ে যাওয়া বা বেঁকে যাওয়া
  • খাদ্যের গন্ধ বা রং লেগে থাকা
  • কোনো অংশ আলগা হয়ে যাওয়া

প্লাস্টিকের বিকল্প

বিশেষজ্ঞরা এমন সংরক্ষণ পাত্র ব্যবহারের পরামর্শ দেন, যেগুলো রাসায়নিকভাবে নিরপেক্ষ; অর্থাৎ গরমে কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়া করে না।

প্লাস্টিকের বিকল্পগুলো হলো—

কাচের পাত্র: ভারী হলেও টেকসই, গরমে বিকৃত হয় না, গন্ধ ধরে না।

স্টেইনলেস স্টিল, সিরামিক বা চীনামাটির পাত্র: টেকসই ও নিরাপদ।

যদিও ফুড-গ্রেড সিলিকন সাধারণত নিরাপদ, তবু দীর্ঘদিন ব্যবহারে তাপ সহনশীলতা কমে যায়। এতে সিলিকনের অণু খাবারে চলে যেতে পারে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

ডা. ভিজকায়া-রুইজ বলেন, ‘উচ্চ তাপমাত্রায় প্লাস্টিক পাত্র থেকে ফথালেটস ও বিসফেনল এ (বিপিএ) এর মতো ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ বের হতে পারে। এগুলো হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে। এ ছাড়া প্রজনন সমস্যা এবং নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।’

তথ্যসূত্র: ভেরি ওয়েল হেলথ ও সিলিকনমেনিয়া ডট কম

প্রজনন স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পুরুষদের যে ৭টি অভ্যাস বদলানো উচিত

আজকের রাশিফল: বহু যত্নে লালিত স্বপ্ন সত্যি হবে, সাবধানে মুখ খুলুন

আজকের রাশিফল: প্রিয়জন-বেষ্টিত থেকেও নিঃসঙ্গ লাগবে, মানুষ চেনার অধ্যায় শুরু

পাঁচ তারা হোটেলেও চুরি হয় জিনিসপত্র, জড়িত কারা

আজকের রাশিফল: সারা দিন মুড সুইং চলবে, স্বপ্নের গল্প সত্যি বলে চালাবেন না

শীতকালে লেপে মুখ ঢেকে ঘুমাচ্ছেন, বিপদ ডেকে আনছেন না তো

প্রতিদিন ওজন কমবেশি হয় যে ৫ কারণে

আজকের রাশিফল: একটু কঞ্জুস হোন, রোমান্সের জন্য দারুণ দিন হলেও রাতে ঝগড়ার সম্ভাবনা

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের মেসেজ পেয়ে আবেগে ভেসে যাবেন, কর্মক্ষেত্রে প্রশংসিত হবেন

আজকের রাশিফল: আজ ফিল্টার ছাড়া মুখ ছুটবে, তর্কে জড়ালে বুমেরাং হবে