ঈদ, বিয়ে, ওলিমা, আকিকা, আত্মীয়স্বজনের পুনর্মিলনী কেন্দ্র করে প্রায় প্রতিটি পরিবারে বছরের নানা সময়ে ভোজ অনুষ্ঠান চলে। অনুষ্ঠানের দাওয়াত যায় এক আত্মীয় থেকে আরেক আত্মীয়ের বাড়িতে।
দাওয়াত পাওয়ার পর ভোজ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে রয়েছে কিছু ইসলামি শিষ্টাচার। যেমন, নিজের সঙ্গে অতিরিক্ত লোক না নেওয়া।
আমাদের সমাজে বহুল প্রচলিত একটা বদ রীতি হলো, একজনকে দাওয়াত দিলে সঙ্গে যায় আরও কয়েকজন। এটা অভদ্রতা। এতে মেজবানের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি হয়।
ইসলাম বলে, কেউ দাওয়াত দিলে তা গ্রহণ করা সুন্নত। বিনা কারণে দাওয়াত অগ্রাহ্য করা অনুচিত। আবার বিনা দাওয়াতে কারও ভোজ অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়াও অনুচিত। বিনা দাওয়াতে ভোজে অংশ নেওয়া ব্যক্তিকে চোর ও লুটেরার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে হাদিসে।
রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যাকে দাওয়াত দেওয়ার পরও সে তা কবুল করল না, সে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের নাফরমানি করল। আর যে দাওয়াত ছাড়াই উপস্থিত হলো, সে চোর হয়ে ঢুকল এবং লুটেরা হয়ে বের হলো। (সুনানে আবু দাউদ: ৩৭৪১)
এ ছাড়া কেউ দাওয়াত দিলে তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ হওয়া, তাঁর কল্যাণের জন্য দোয়া করা উচিত। এটা মহানবী (সা.)-এর শিক্ষা। রাসুলুল্লাহ (সা.) কারও বাড়িতে দাওয়াত খেতে গেলে মেজবানের জন্য দোয়া না করে ফিরতেন না।
একবার আবুল হাইসাম (রা.) নবী করিম (সা.) ও তাঁর সাহাবিদের দাওয়াত করলেন। খাওয়া শেষে নবীজি (সা.) বললেন, তোমাদের ভাইকে সওয়াব দান করো। তাঁরা বললেন, আমরা তাঁকে কীভাবে সওয়াব দান করব? তিনি বললেন, কাউকে যখন কোনো ঘরে খাওয়ার জন্য ডাকা হবে, তখন পানাহার করার পর সে যদি নিমন্ত্রণকারীর জন্য দোয়া করে, তাহলে সেটিই হবে মেজবানের জন্য সওয়াব পৌঁছানো।
আবদুল্লাহ ইবনে বুসর (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের বাড়িতে খাবার খেয়ে এই দোয়া করেছেন, ‘আল্লাহুম্মা বারিক লাহুম ফি-মা রাজাকতাহুম, ওয়াগফির লাহুম ওয়ারহামহুম।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, তাদের যে রিজিক দিয়েছেন, তাতে বরকত দান করুন, তাদের ক্ষমা করুন এবং তাদের প্রতি দয়া করুন।’ (সুনানে তিরমিজি: ৩৫৭৬)