জাতিসংঘের ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা সংস্থার (ওসিএইচএ) প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস বলেছেন, তাঁদের কাছে হামাস কোনো সন্ত্রাসী সংগঠন নয়। এটি একটি রাজনৈতিক মতাদর্শ। গত বুধবার স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। ইসরায়েলের গণমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইসরায়েল খবরটি দিয়েছে।
ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিনের অংশ হবে না হামাস—জোর দিয়ে এ কথা বারবারই বলছে ইসরায়েল। সাক্ষাৎকারটিতে এ প্রসঙ্গেই মার্টিন গ্রিফিথসের মতামত জানতে চাওয়া হয়েছিল। জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থার প্রধান বলেন, কোনো আলোচনা ছাড়াই এই সংগঠনগুলোকে সরিয়ে দেওয়া খুব কঠিন। কারণ সংগঠনগুলো স্থানীয় মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিনিধিত্ব করে।
গতকাল বৃহস্পতিবার নিজের এই বক্তব্যকে পরিষ্কার করে সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এক্সে পোস্ট দিয়েছেন মার্টিন গ্রিফিথস। তিনি বলেন, ‘শুধু স্পষ্ট করার জন্য বলছি—জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকায় হামাস নেই। তবে এতে গত ৭ অক্টোবরে তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কম ভয়ংকর বা কম নিন্দনীয় হয়ে যায় না। আমি এটা বারবার বলে আসছি।’
স্কাই নিউজের সাক্ষাৎকারে গ্রিফিথস আরও বলেন, ‘আপনি যদি এমন লোকদের কাছে নিরাপদ থাকতে চান, যারা অবধারিতভাবে আপনার প্রতিবেশী হতে চলেছে, তবে তাদের সঙ্গে অভিন্ন মূল্যবোধের ভিত্তিতে একটি সম্পর্ক তৈরি করতে হবে।’
তবে মার্টিন গ্রিফিথসের এসব কথার তীব্র সমালোচনা করেছে ইসরায়েল। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এক্স প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন, ‘তাকে (মার্টিন গ্রিফিথস) ধিক্কার! জাতিসংঘ প্রতিদিনই আরও নিচে নামছে। জাতিসংঘের সহায়তাসহ কিংবা ছাড়াই আমরা হামাসকে নির্মূল করব। ইহুদিদের রক্ত সস্তা নয়।’
জাতিসংঘে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদানও জোরালো ভাষায় গ্রিফিথসের সমালোচনা করেছেন। তাঁর মতে, জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সংস্থা ওসিএইচএ সন্ত্রাসীদের পক্ষে অজুহাত দেয়, হামাসের প্রচারণা চালায় এবং ক্ষতিগ্রস্তদের দোষারোপ করে।
সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের হামাসপন্থী অবস্থান অবশেষে টিভিতে উন্মোচিত হয়েছে। শত শত বেসামরিক মানুষকে নৃশংসভাবে হত্যা করা কি সন্ত্রাস নয়? নারীদের পরিকল্পিতভাবে ধর্ষণ কি সন্ত্রাস নয়? ইহুদিদের গণহত্যার চেষ্টা কি সন্ত্রাস নয়?’
গ্রিফিথসের উদ্দেশে গিলাদ এরদান বলেন, ‘আপনি মানবতাবাদী নন। দুঃখের বিষয়, আপনি সন্ত্রাসীদের সহযোগী।’