গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ফিল্ম সিটিতে চলছে স্বাধীনতা যুদ্ধের নৌ-সেক্টরে পরিচালিত সফলতম গেরিলা অপারেশন নিয়ে চলচ্চিত্র ‘অপারেশন জ্যাকপট’ এর শুটিং। আর সেখান থেকে সম্প্রতি ফাঁস হওয়া একটি ছবি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে আলোচনা ও ট্রল। ভাইরাল হওয়া সেই ছবিতে দেখা যায়, সাদা স্যান্ডু গেঞ্জি ও হাফ প্যান্ট পরে দাঁড়িয়ে আছেন অনন্ত জলিল, ইমন, সাঞ্জু এবং শিপন। এর মধ্যে উচ্চতা বাড়াতে স্তূপকৃত মাটির ওপর দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে অনন্ত জলিলকে।
সেই ছবি নিয়ে আলোচনা ও ট্রলের বিষয়ে কথা হয় সিনেমাটির নির্মাতা রাজীব বিশ্বাসের সাথে। তিনি আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, এ ধরনের কাজে তিনি মর্মাহত হয়েছে। উচ্চতা ও গায়ের রং নিয়ে কাউকে সমালোচনা করাকেও নিচু মানসিকতার পরিচয় বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
রাজীব বিশ্বাসের কথায়, ‘দেখুন একটি সিনেমার শুটিংয়ে অনেক কিছুই হয়ে থাকে। সেগুলো নিয়ে কেন আলোচনা হবে? আলোচনা-সমালোচনা হবে নির্মাণের পর। নির্মাতা হিসেবে অবশ্যই আমাকে তা হজম করতে হবে। কিন্তু এই বিষয়টি যা হয়েছে তা সমালোচনা কিংবা ট্রল নয়, একজন মানুষের দুর্বলতা নিয়ে এমন আলোচনা আমাদের নিচু মানসিকতার পরিচয়।’
রাজীব আরও বলেন, ‘শিল্পীদের ডেডিকেশন নিয়ে আপনি প্রশংসা না করুন। অন্তত এমন কাজে তাঁদের মনোবল ভাঙবেন না। এটা স্রেফ অন্যায়।’
শুটিং থেকে ছবিটি ফাঁস হওয়ার বিষয়ে রাজীব বিশ্বাস বলেন, ‘দেখুন এখন সেটে ৪০০ জন জুনিয়র আর্টিস্ট, ৫০ জন প্রধান আর্টিস্ট ও ১৫০ জনের বেশি টেকনিক্যাল টিম নিয়ে আমি কাজ করছি। সবার হাতেই তো স্মার্ট ফোন আছে। আমরা যথেষ্ট সচেতন থাকার পরও যিনি এই কাজটি করেছেন তিনি কাজটি ঠিক করেননি।’
‘অপারেশন জ্যাকপট’ সিনেমাটিতে অভিনয় করছেন—অনন্ত জলিল, অমিত হাসান, জিয়াউল রোশান, মামনুন ইমন, নিরব হোসেন, জয় চৌধুরী, সাঞ্জু জন, শিপন মিত্র ও আমান রেজা। আরও অভিনয় করবেন আহমেদ শরীফ, ইলিয়াস কাঞ্চন, মিশা সওদাগর, ড্যানি সিডাক, খোরশেদ আলম খসরু, কাজী হায়াত প্রমুখ।
ঐতিহাসিক ঘটনায় ‘অপারেশন জ্যাকপট’ নির্মাণ করছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এই ছবি নির্মাণের দায়িত্ব পেয়েছেন কলকাতার নির্মাতা রাজীব বিশ্বাস ও বাংলাদেশের দেলোয়ার জাহান ঝন্টু। সিনেমাটিতে তুলে ধরা হবে স্বাধীনতা যুদ্ধের নৌ-সেক্টরে পরিচালিত সফলতম গেরিলা অপারেশন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ‘অপারেশন জ্যাকপট’ নামের অভিযানে চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্রবন্দর, চাঁদপুর ও নারায়ণগঞ্জে একযোগে গেরিলা অপারেশন চালানো হয়েছিল। সেই অভিযানে পাকিস্তান ও অন্য আরও কয়েকটি দেশ থেকে অস্ত্র, খাদ্য ও তেল নিয়ে আসা ২৬টি জাহাজ ডুবিয়ে দিয়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা।