চলমান বৃষ্টি আর ঢলের পানিতে নগরীর আখালিয়া এলাকায় কোমরপানি। দুদিন আগে অঝোর বৃষ্টির মধ্যে আখালিয়া বিজিবি গেটের গ্রিলে একটি বেজিকে বসে থাকতে দেখা যায়। মানুষ দেখলেই দৌড়ে পালিয়ে যাওয়া যেই প্রাণীর স্বভাব, ওই দিন বেজিটি মানুষ দেখেও পালায়নি। মানুষজন কাছাকাছি গেলে আত্মরক্ষার্থে চিৎকার করলেও গ্রিল আঁকড়ে ছিল। অবশ্য চারদিকে থইথই পানি। পালাবার পথ কই!
এই বেজির মতোই অবস্থা সিলেটের পশুপাখিদের। আকস্মিক বন্যায় বিপাকে পড়া মানুষ সাধ্যমতো গৃহপালিত পশুপাখি সঙ্গে করে আশ্রয়কেন্দ্রে গেছেন। কিন্তু বিপাকে পড়ছে মুক্ত থাকা কুকুর ও বিড়াল। প্রাণে বাঁচতে প্রাণপণ চেষ্টা করছে তারা। বন-জঙ্গলে থাকা পশুপাখিও বাসস্থান ও খাবার সংকটে পড়েছে।
গতকাল রোববার রাতে সিলেটের উপশহরের সি-ব্লকের ৩৭ নম্বর রোডে পানিবন্দী অবস্থায় আতঙ্কিত ও অভুক্ত একটি কুকুর উদ্ধার করেন পরিবেশ কর্মী বিনয় ভদ্র। তাঁর মতো নগরীর বেশ কয়েকজন সংস্কৃতি, সামাজিক ও পরিবেশ কর্মী কাজ করছেন পানিবন্দী এসব প্রাণী উদ্ধারে।
এদিকে বিপাকে পড়া এসব প্রাণীকে উদ্ধার ও খাবার সরবরাহ করছেন ‘অ্যানিমেল লাভারস অব সিলেট’ নামের একটি সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা। এই সংগঠনের কর্মীরা জানান, গত তিন দিনে নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাঁরা প্রায় ৩০টি কুকুর পানি থেকে উদ্ধার করে শুকনো জায়গায় রেখেছেন। প্রায় ২০০ অভুক্ত কুকুরকে খাবার খাইয়েছেন। একই সময়ে তাঁরা প্রায় ১৫টি বিড়ালকে কাকভেজা অবস্থায় পানি থেকে উদ্ধার করে বিড়ালপ্রেমীদের বাসায় নিরাপদে রেখেছেন।
এদিকে বন্যার মধ্যে নৌকা ভাড়া অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ার বিপাকে পড়েছেন প্রাণী উদ্ধারকর্মীরা। আয়েশা আরা বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে নৌকা ভাড়া অনেক বেশি, তাই আমরা ঢাকা থেকে কিছু প্লাস্টিকের নৌকা নিয়ে এসেছি এই প্রাণীদের উদ্ধারের জন্য। এই কাজের জন্য আরও স্বেচ্ছাসেবী প্রয়োজন। এ ব্যাপারে কেউ কাজ করতে চাইলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগের অনুরোধ করছি।’