সিলেটের বিশ্বনাথে একই সময়ে এক শ গজের মধ্যে পৌরসভার মেয়র ও নারী কাউন্সিলরের পাল্টাপাল্টি প্রতিবাদ সভায় ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। আজ রোববার বেলা ৩টার দিকে এ ঘটনায় পথচারী নারীসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। ভাঙচুর করা হয়েছে বেশ কয়েকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও দোকানপাট।
এ সময় বিশ্বনাথ-রামপাশা-লামাকাজী সড়কে প্রায় আধা ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ।
ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় মেয়রের পক্ষের আহত ইংরেজ আলী, সমুজ আলী, আনোয়ার আলীসহ বেশ কয়েক জনকে চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে মেয়র-কাউন্সিলরদের দ্বন্দ্বে বিশ্বনাথ চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমানের বিরুদ্ধে মারধর, শ্লীলতাহানি ও তাঁর নির্দেশে গাড়ি দিয়ে হত্যার চেষ্টার অভিযোগে পৌরসভার ২ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর রাসনা বেগমের মামলা করেন। এর প্রতিবাদে পৌর শহরের নতুন বাজার এলাকায় মেয়রের বাসার সামনে আজ রোববার বেলা ৩টার দিকে প্রতিবাদ সভা আহ্বান করেন মেয়র পক্ষের লোকজন।
এ সময় মেয়রের বাসা লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন পৌর আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। ইট পাটকেল নিক্ষেপের সময় কয়েকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও দোকানপাট ভাঙচুরেরও ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে বিশ্বনাথ পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক আব্দুল জলিল জালাল বলেন, ‘পৌরসভার নারী কাউন্সিলর ও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক রাসনা বেগমের ওপর হামলার প্রতিবাদে এবং পৌর মেয়র মুহিবুর রহমানের গ্রেপ্তার ও অপসারণের দাবিতে অনুষ্ঠিত পৌর আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ সভায় মেয়র মুহিবুর রহমানের বাসা থেকে তাঁর (মুহিব) পক্ষের সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়, সাধারণ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা তা প্রতিহত করেছি।’
এ ব্যাপারে কথা বলতে বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিক কল দেওয়া হলে তিনি ধরেননি।
উল্লেখ্য, গত ২৩ এপ্রিল দুপুর ১টার দিকে পৌরসভার দক্ষিণ মিরেরচর কমিউনিটি ক্লিনিক এলাকায় হামলার শিকার হন পৌরসভার ২ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর রাসনা বেগম। এ ঘটনায় ওই রাতে পৌর এলাকায় সর্বস্তরের নাগরিকের ব্যানারে পৌর মেয়র মুহিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ঝাড়ু–মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে ১৬ এপ্রিল স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবর অনাস্থা প্রস্তাব দেন পৌরসভার দুই প্যানেল মেয়রসহ ৭ কাউন্সিলর। পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ভারসাম্যহীনভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার, কাউন্সিলর ও জনগণের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ প্রদর্শন ও গালিগালাজ, স্বজনপ্রীতি, ময়লা-আবর্জনার পরিষ্কার করাসহ নানা অভিযোগ এনে অনাস্থা প্রস্তাব দেওয়া হয়।