হোম > সারা দেশ > শরীয়তপুর

নড়িয়া সন্দেশ খেয়েছেন?

সোহাগ খান সুজন, নড়িয়া (শরীয়তপুর)

কত জায়গার কত সন্দেশের গল্পই তো পড়েছেন। নড়িয়া সন্দেশ কি চেখে দেখেছেন কখনো? হ্যাঁ, সন্দেশের নামই নড়িয়া সন্দেশ। নড়িয়ায় তৈরি বলে এর নাম নড়িয়া সন্দেশ।

শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলায় কবে থেকে এই সন্দেশ তৈরি হয়, তা কেউ জানে না। তবে মনে করা হয়, এখানে সন্দেশ তৈরি হয় ২০০ বছর ধরে।

নড়িয়ায় যদি কোনো মিষ্টির দোকানে বসে সন্দেশ দিতে বলেন, তাহলে বাইরে থেকে এসেছেন বুঝে নিয়ে দোকানি চলে আসবেন আপনার কাছে। তারপর বলবেন, ‘সন্দেশটা খেয়ে দেখুন। এই সন্দেশ আর কোথাও পাবেন না। এটা শুধু আমাদের নড়িয়াতেই পাওয়া যায়।’

তাঁর দাবি সত্য কি না, সেটা নিশ্চিত করবে আপনার জিহ্বা। যদি মনে করেন, আসলেই এ এক নতুন স্বাদ পেলেন, তাহলে অন্যদের জন্য কিছু সন্দেশ কিনে নিতে ভুলবেন না যেন। অন্য সন্দেশ থেকে এই সন্দেশকে আলাদা করে গরুর দুধের টাটকা ঘ্রাণ।

একসময় প্রায় ৫০টি দোকানে তৈরি হতো নড়িয়া সন্দেশ। এখন গোটা সাতেক মানুষ ধরে রেখেছেন এই ঐতিহ্য। তাঁদের মধ্যে পরিমল ঘোষ একজন। তাঁর সঙ্গেই সন্দেশ নিয়ে কথা হয়।

শরীয়তপুরে বিভিন্ন দোকানে নড়িয়ার এই সন্দেশ মেলে। কিন্তু নামে নড়িয়া সন্দেশ হলেও সবই যে সুস্বাদু হবে, এই গ্যারান্টি দেওয়া যাচ্ছে না। তাই ভোজনরসিক ক্রেতা কোনো রকম ঝুঁকির মধ্যে না গিয়ে অনেক পথ পাড়ি দিয়ে হলেও চলে আসেন নড়িয়া বাজারে। হ্যাঁ, এখান থেকে সন্দেশ কিনলে ঝুঁকি নেই।

এই সন্দেশের সঙ্গে কীর্তিনাশা নদীর একটা যোগাযোগ আছে। নড়িয়া বাজারের সঙ্গেই বয়ে চলেছে এই কীর্তিনাশা নদী। ব্রিটিশ আমলে এই নদীপথেই চলত বড় বড় স্টিমার। এই স্টিমারের যাত্রীদের মধ্যে থাকতেন তৎকালীন দক্ষিণ অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা। আর থাকতেন  ব্রিটিশরা। স্টিমারটি এসে থামত রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে। সেখানে নেমে এরপর ট্রেনে চড়ে কলকাতা শহরে যেতেন তাঁরা। তখন নড়িয়ায় স্টিমারঘাট ছিল। যাত্রাবিরতিতে সেই ঘাটে নেমে যাত্রীরা এই সন্দেশ খেতেন এবং সঙ্গে করে নিয়ে যেতেন। এ যেন পরিণত হয়েছিল ঐতিহ্যে।

আপনি চাইলে আর পরিমল ঘোষের মনে ফুর্তি থাকলে তাঁর কাছ থেকে জেনে নিতে পারবেন এই সন্দেশ তৈরির রেসিপি। সাধারণত ৬-৭ কেজি দুধ থেকে ১ কেজি ছানা পাওয়া যায়। সেই ছানার সঙ্গে ১ কেজি চিনি মিশিয়ে অল্প জ্বালে রাখতে হয়। ২০ থেকে ৩০ মিনিট পর পাকিয়ে অল্প আঁচে ৫ মিনিট রাখলেই কাঁচামাল তৈরি। পরিমাণমতো নিয়ে গোল করে হাতের ওপরে রেখে চাপ দিয়ে সন্দেশের আকার দেওয়া হয়। সন্দেশ তৈরিতে পরিমাণমতো আঁচ ও পাকই হলো মূল। খাঁটি ছানা ও চিনি ছাড়া অন্য কিছু ব্যবহার না করায় এই সন্দেশ সুস্বাদু।

নড়িয়া সন্দেশের কেজি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা। কেজিতে ২৫টির মতো সন্দেশ থাকে।

সন্দেশের আরেক দোকানি বিমল ঘোষ বলেন, ‘দুধ, চিনি এবং শ্রমিকদের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় এখন লাভ কম, তবু ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে মানের সঙ্গে আপস করি না।’

নড়িয়া সন্দেশ একবার খেয়ে দেখতে হয়! তারপরই তো বোঝা যাবে, বারবার খেতে হবে কি না!

শীত নিবারণের আগুনে পুড়ে ঘুমন্ত বৃদ্ধার মৃত্যু

ময়লার গাড়িতে সরকারি ওষুধ পাচারের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন

ময়লার গাড়িতে সরকারি ওষুধ পাচারকালে হাসপাতালের ২ কর্মচারী আটক

অটোরিকশার মোটরে ওড়না পেঁচিয়ে গার্মেন্টস কর্মীর মৃত্যু

পদ্মা সেতুর সামনে এক্সপ্রেসওয়েতে চিনির ট্রাকে অগ্নিসংযোগ, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আ.লীগের মিছিল

শরীয়তপুরে পুকুরে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু

‘সুদে ১৭ লাখ নিয়ে ১৮ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছি, তবুও বাড়ি দখল’

ছুটিতে গেলেন সেই বিচারক

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে মৃত্যু: শৈশবেই এতিম, ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন আবুল কালাম

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জাজিরায় প্রকাশ্যে চলছে ইলিশ বেচাকেনা