হোম > সারা দেশ > কুড়িগ্রাম

বয়স্ক ভাতার খবরই যায়নি অন্ধ ছবিজনের কাছে

ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্বধনিরাম গ্রামের বাসিন্দা ছবিজন বেওয়ার বয়স ৭৫ বছর। এক দুর্ঘটনায় যৌবনেই দৃষ্টিশক্তি হারান তিনি। সুন্দরী ছবিজনকে এই কারণে তালাক দেন স্বামী। সেই থেকে ভাইয়ের পরিবারে থাকছেন। বয়সের ভারে ন্যুব্জ এই নারী তীব্র দারিদ্র্য সঙ্গী করে জীবন পার করছেন। কিন্তু এতদিনেও তাঁর ভাগ্যে জোটেনি সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির কোনো সহায়তা।

সুন্দর মুখশ্রীর কারণে বাবা-মা আদর করে নাম রাখেন ছবিজন। সুন্দর মুখশ্রীর সেই ছবিজনের জীবন এতটা ‘অসুন্দর’ আর কষ্টে ভরা হবে কে জানত!

ছবিজন বেওয়ার ছোট ভাই আসমত মিয়া (৬৯) মানসিক প্রতিবন্ধী। তাঁর কপালেও জোটেনি কোনো সরকারি সহায়তা। তাঁর ছেলের আয়েই চলে তাঁদের সংসার

সরেজমিন ওই গ্ৰামে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিবেশীর পরিত্যক্ত এক বাড়ির কোণে জীর্ণশীর্ণ চেহারার ছবিজন বেওয়া ও একটু দূরে আসমত বসে আছেন। ছবিজন একাকী দাঁড়াতে ও চলতে পারেন না। কথা বললে উদভ্রান্তের মতো ওপরের দিকে তাকান। দুটি চালাঘরের একটিতে আসমতের পরিবার, অন্যটিতে থাকেন ছবিজন।

৪৫ বছর আগে প্রতিবেশী আজিমুদ্দিনের সঙ্গে বিয়ে হয় ছবিজনের। বিয়ের পাঁচ বছরের মাথায় এক রাতের কালবৈশাখী ঝড়ে খড়ের ঘর ভেঙে পড়ে ছবিজনের মাথায়। এতে গুরুতর আহত হন তিনি। একপর্যায়ে দৃষ্টিশক্তি হারান। এ কারণে স্বামী তাঁকে পরিত্যাগ করেন। সেই থেকে তাঁর জীবনে নেমে আসে অমানিশা। যা আজও তাঁর সঙ্গী হয়ে আছে।

উপজেলার পশ্চিম ধনিরাম গ্ৰামের সোলাইমান মিয়া বলেন, ছবিজন বেওয়া অন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্বামী তাঁকে ছেড়ে গেছেন। তাঁর কোনো সন্তান নেই। তাঁর ভাই আসমত পাগলা প্রায় ৪০ বছর ধরে তাঁর দেখাশোনা করছেন।

একই গ্ৰামের মহির উদ্দিন বলেন, আসমত নিজে অচল। বর্তমানে তাঁর ছেলে ফজলু মিয়া তাঁদের দেখাশোনা করেন। টানাটানির সংসারে ছবিজন ও আসমত মিয়ার খুব কষ্টে দিন যাচ্ছে। এরা ঠিকমতো খেতে-পরতে পারে না।

আসমত মিয়ার ছেলে ফজলু মিয়া বলেন, ‘আমার বাবার বাড়িভিটাসহ দুই বিঘা জমি ছিল। কিছু জমিতে চাষাবাদ আর অন্যের জমিতে কামলা দিয়ে সংসারের খরচ জোগাতাম। নদীভাঙনে সব ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। অন্ধ ফুপু আর অসুস্থ বাবাসহ পরিবারের ছয়জনের খাবার জোগানো আমার পক্ষে কষ্টসাধ্য ব্যাপার। আমরা খুব কষ্টে দিনযাপন করছি।’

পূর্ব ধনিরাম গ্ৰামের মজিবর রহমান বলেন, ‘অনেক সচ্ছল মানুষ ভাতা পেলেও ছবিজন ও আসমতের কপালে ভাতা জোটেনি, এটা দুঃখজনক।’

স্থানীয় বড়ভিটা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘আমি নতুন নির্বাচিত হয়েছি। আগে কেন তাঁরা ভাতা-বঞ্চিত ছিলেন আমার জানা নেই। তাঁরা ভাতার জন্য যোগাযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বড়ভিটা ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিন্টু বলেন, ‘যোগাযোগবিচ্ছিন্ন প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের নিভৃত এলাকায় তাঁদের বসবাস। এ কারণে তাঁরা অনেকটা সবার দৃষ্টির আড়ালে ছিলেন। ফলে ভাতা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এটা আসলেই দুঃখজনক। আমি দ্রুত তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভাতা পাওয়ার ব্যবস্থা করব। ব্যক্তিগতভাবেও সহায়তা করার চেষ্টা করব।’

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

পীরগঞ্জে ধানখেত থেকে অটোভ্যানচালকের মরদেহ উদ্ধার

হাদির ওপর গুলির প্রতিবাদে গাইবান্ধায় বিএনপির বিক্ষোভ

নীলফামারীতে ট্রেনে কাটা পড়ে যুবকের মৃত্যু

৮ হাজার টাকা চুরি করতেই সস্ত্রীক মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা: পুলিশ

রংপুরে মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর স্ত্রীকে হত্যার ঘটনায় টাইলসমিস্ত্রি গ্রেপ্তার

সারের দাবিতে কৃষকদের মহাসড়ক অবরোধ

অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি

রংপুরে মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর স্ত্রীকে হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন

রংপুর বিভাগীয় ইজতেমার প্রথম দিনেই দুই মুসল্লির মৃত্যু