উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা দিনাজপুরে গত সপ্তাহে দুই দিন গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির পর তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। আর এতে করে বাড়ছে শীতের প্রকোপ। নিয়মিত সূর্যের দেখা না পাওয়া ও হালকা হিমেল বাতাসে সন্ধ্যার পর থেকে শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। গত কয়েক দিনে এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ঘন কুয়াশা। এতে দিনের বেলায়ও যানবাহনে লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
এদিকে আজ রোববার সকালে দিনাজপুর জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা চলতি মৌসুমে দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড।
তাপমাত্রা কমায় ব্যস্ততা বেড়েছে জেলার লেপ-তোশকের দোকানে। পাশাপাশি বিভিন্ন গরম কাপড়ের দোকানেও বিক্রি বেড়েছে। শীতের পিঠাপুলি তৈরির ধুম পড়েছে। সড়কের পাশের দোকানগুলোতে ভিড় করে মানুষ পিঠার স্বাদ উপভোগ করছেন।
জেলার চিরিরবন্দর উপজেলার বড়গ্রামের ইটভাটার শ্রমিক সবুজ ইসলাম বলেন, ‘তিন দিন ধরি ভাটায় যাইনি। দুদিনের পানি (বৃষ্টি) আর গতকাইলও সূর্যের দেখা পাইনি, আবার বইছে শীতল বাতাস। এ কারণে বাসায় বসি আছি।’
এদিকে ঠান্ডা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শীতজনিত রোগে আক্রান্তের হার বেড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা বেশি পরিমাণে আক্রান্ত হচ্ছেন। হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বেড়েছে।
দিনাজপুর অরবিন্দ শিশু হাসপাতালের সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান জানান, এ হাসপাতালে মোট ১২০টি বেড রয়েছে। বর্তমানে প্রতিটি বেডেই রোগী ভর্তি আছে। অনেকেই অপেক্ষমাণ আছে। গুরুতর অসুস্থ শিশুরা এলে তাদের দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগে স্থানান্তর করা হচ্ছে।
দিনাজপুরের সিভিল সার্জন এ এইচ এম বোরহানুল ইসলাম সিদ্দিকী জানান, দুই দিনের বৃষ্টিতে হঠাৎ তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শিশুরা শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এ সময় শিশুদের গরম কাপড় ও বাইরে চলাচলের বিষয়ে সজাগ থাকা দরকার। সেই সঙ্গে শীতকালীন শাকসবজি ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে।
জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানান, আজ রোববার দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ। চলতি বছরে এটি জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। গত সপ্তাহে টানা দুই দিন গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হওয়ায় তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। চলতি সপ্তাহে বৃষ্টির সম্ভাবনা নাই। তবে ডিসেম্বর মাসের শেষে জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।