‘আজক্যা যদি এই কারেন্টের তারগুলাত কভার দেওয়া থাকিল হয়, তাহলে কি আর আজক্যা মোর গোয়াল খালি হয়? আজক্যা এই পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কারণে মোর গোয়ালখালি হইল।’ এভাবেই গোয়াল ঘরের দরজায় বসে মাথায় হাত দিয়ে বিলাপ করছিলেন হরেন্দ্রনাথের স্ত্রী ববিতা রানী।
হরেন্দ্রনাথ (৫০) রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার বেতগাড়ী ইউনিয়নের দোন্দরা গ্রামের মৃত দেবেন্দ্রনাথ সরকারের ছেলে।
গতকাল রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে গ্রামের ক্লাব মোড়ে হরেন্দ্রনাথের বাড়ির পেছনে গাছের ডাল ভেঙে পল্লী বিদ্যুতের গ্রিড লাইনের তার ছিঁড়ে যায়।
ছেঁড়া তারটি হরেন্দ্রনাথের গোয়াল ঘরের পেছনে পুকুরে পড়লে তাঁর বাড়িসহ আশপাশের তিনটি বাড়ি বিদ্যুতায়িত হয়। এতে গোয়ালঘরে থাকা পাঁচটি গরু ও একটি ছাগল মারা যায়। আহত হন হরেন্দ্রনাথ ও তাঁর স্ত্রী ববিতা রানী। হরেন্দ্রনাথের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা কাশেম আলী (৬০) আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা ১০-১২ জন ক্লাব মোড়ে বসে গল্প করছিলাম। হঠাৎ গরুর ডাক শুনে সবাই ছুটে আসি; কিন্তু গোয়ালঘর বিদ্যুৎতায়িত হওয়ায় আমরা গরুগুলোর কাছে যেতে পারিনি। গরুগুলো ঘরের ভেতরেই লাফালাফি করতেছিল আর গলা ফাটিয়ে ডাকতেছিল। এ সময় পল্লী বিদ্যুতের অফিসে ফোন দিলেও তারা ফোন ধরেনি। কয়েকজন বাধ্য হয়ে অফিসে গিয়ে কথা বলে লাইন বন্ধ করা হয়। পরে গরুর ঘর খুলে দেখি পাঁচটি গরু ও একটি ছাগল মরে আছে।’
এ সময় ববিতা রানি দাবি করে বলেন, পল্লি বিদ্যুতের কারণে তার ৩ লাখ টাকার গরু-ছাগল মারা গেছে।
অভিযোগের বিষয়ে পাগলাপীর জোনাল অফিসের ডিজিএম (কারিগরি) মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আমরা বিষয়টি জেনেছি। তবে এসব গরু-ছাগলের মৃত্যু পল্লী বিদ্যুতের ছেঁড়া তারে নয়। কারণ গোয়ালঘর থেকে অনেক দূরে তারটি ছিঁড়ে পড়েছিল। আমরা ধারণা করছি, এসব গরু-ছাগলের মৃত্যু বজ্রপাতের কারণে হয়েছে।’