হোম > সারা দেশ > রংপুর

রাওজা জানেই না, তার বাবা নেই

শিমুল দেব, উলিপুর (কুড়িগ্রাম) 

শহীদ রায়হানুল ইসলাম রায়হান। ফাইল ছবি

রাফনাজ বিনতে রায়হান রাওজা এখন ১৬ মাস বয়সী শিশু। সে জানে না, তার বাবা আর নেই। বড় হয়ে সে আর ‘বাবা’ ডাকতে পারবে না। স্বামী হারিয়ে স্ত্রী রিফাত জাহান রিতু দিশেহারা। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে পিতা-মাতাও বাকরুদ্ধ।

২০২৪ সালের ১৯ জুলাই ঢাকার বাড্ডায় কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হন রায়হানুল ইসলাম রায়হান (৩৫)। তিনি কুড়িগ্রামের উলিপুর পৌরসভার মুন্সিপাড়া এলাকার আব্দুর রশিদের একমাত্র সন্তান ছিলেন।

শনিবার (১৯ জুলাই) দুপুরে সরেজমিনে নিহত রায়হানের বাড়িতে গেলে তাঁর বাবা, মা ও স্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়। রায়হানের কথা বলতে গিয়ে তাঁরা বারবার কান্নায় ভেঙে পড়েন। আশপাশের পরিবেশও ভারী হয়ে উঠেছিল শোক আর আবেগে।

স্থানীয় সূত্র ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রায়হান এসএসসি পাসের পর ঢাকায় গিয়ে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়জীবন শেষ করেন। পরে ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সহকারী ম্যানেজার পদে চাকরি শুরু করেন। পাঁচ বছর আগে রিফাত জাহান রিতুকে বিয়ে করেন। তাঁদের ১৬ মাস বয়সী একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। মৃত্যুর আগে স্ত্রী ও নবজাতক সন্তানকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনাও করছিলেন তিনি।

রায়হানের পরিবার জানায়, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই জুমার নামাজ শেষে বাড্ডা এলাকায় বের হলে তিনি পুলিশের গুলিতে আহত হন। একটি গুলি তাঁর ডান চোখের পাশে লেগে মাথার পেছন দিয়ে বের হয়ে যায়। পথচারীরা তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

সেদিন রাত ১০টার দিকে তাঁর মরদেহ অ্যাম্বুলেন্সে করে উলিপুরের উদ্দেশে রওনা দেয় এবং ২০ জুলাই সকালে পৌঁছায়। উলিপুর মহারাণী স্বর্ণময়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে জানাজার পর রায়হানকে উলিপুর কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।

রায়হানের বাবা আব্দুর রশিদ বলেন, ‘ছেলের মৃত্যুর পর থেকে আর স্বাভাবিক জীবন কাটাতে পারছি না। রায়হানের মুখে “আব্বু” ডাক শুনি না বহুদিন। তার আয়ে চলত আমাদের ছোট পরিবার। এখন আমার সামান্য আয়ে কষ্ট করে চলছি। আমার নিরীহ ছেলেকে যারা হত্যা করেছে, আমি তাদের বিচার চাই।’

রায়হানের মা রাহেনা বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘তার মৃত্যুর এক ঘণ্টা আগেও আমার সঙ্গে কথা হয়েছে। প্রতিদিনই কথা হতো। এক বছর হয়ে গেল ছেলের মুখে ‘মা’ ডাক শুনি না। আমার বুকের ভেতরটা এখনো জ্বলছে। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।’

স্ত্রী রিফাত জাহান রিতু বলেন, ‘আমার মেয়ে বড় হয়ে কাকে বাবা বলে ডাকবে? আমার স্বামী আমাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন। তাঁর মৃত্যু আমাদের জীবন থামিয়ে দিয়েছে। যদি সরকার চাকরির ব্যবস্থা করে দিত, তাহলে আমি মেয়েকে নিয়ে বেঁচে থাকতে পারতাম। আমি চাই, যারা আমার স্বামীকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে, তাদের যেন উপযুক্ত শাস্তি হয়।”

রায়হানের মৃত্যুর পর জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ, বিএনপি, জামায়াতে ইসলাম ও ‘জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন’ থেকে পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নয়ন কুমার সাহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে রায়হানের পরিবারকে সহায়তা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে কোনো অনুদান এলে সেটিও দেওয়া হবে।’

সমাবেশ থেকে ফেরার পথে দুর্ঘটনা, প্রাণ গেল কর্মীর

‘১০ লাখ দিলেই তুমি সভাপতি’ বেরোবি ছাত্রদলের কমিটি নিয়ে অভিযোগ

‘সেবা বন্ধ থুইয়া মানুষোক জিম্মি করি আন্দোলন করেছে, গরিব মানুষ কোনঠে যাইবে’

স্থগিতাদেশ তুলে ব্রাকসুর নতুন রোডম্যাপ প্রকাশ

একটি শ্রেণি সংস্কার ছাড়াই ক্ষমতায় যেতে ‘ডাবল পাগল’ হয়ে গেছে: রেজাউল করীম

বাসের ধাক্কায় অটোরিকশার যাত্রী নিহত

পাঁচ দফা দাবিতে রংপুরে সমমনা ৮ দলের বিভাগীয় সমাবেশ আজ, দলে দলে আসছেন নেতা-কর্মীরা

শ্বশুর-জামাইকে পিটিয়ে হত্যায় জড়িতের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার

নীলফামারীতে গৃহবধূকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে ২ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

স্বামীকে হত্যার দায়ে স্ত্রী ও তাঁর প্রেমিকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড