সৌদি আরবে বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যাওয়া এনামুল ইসলামের (২৩) লাশ দেশে আনা হয়েছে। ২ মাস ১৩ দিন পর গতকাল শুক্রবার রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসা লাশ গ্রামের বাড়িতে এনে দাফন করা হয়েছে।
এনামুল ইসলাম দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার সিংড়া ইউনিয়নের বিরাহীমপুর (খামার) গ্রামের রেজাউল হকের ছেলে। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট। গত ১৭ মার্চ সৌদি আরবে বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যান তিনি।
দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শিবলী সাদিকের সহযোগিতায় গতকাল সন্ধ্যায় বিমানে এনামুলের লাশ সৌদি আরব থেকে দেশে আনা হয়। রাত ১১টায় নিজ গ্রামে তাঁর লাশ দাফন করা হয়।
এনামুল এক বছর আগে সংসারের অভাবে মেটাতে সৌদি আরব যান। সেখানে বৈদ্যুতিক টেকনিশিয়ান হিসেবে কাজ করতেন। স্বপ্ন ছিল হাল ধরবেন সংসারের। তবে শেষ পর্যন্ত লাশ হয়ে বাড়ি ফিরলেন তিনি।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ মার্চ সৌদি আরবে কাজ করার সময় বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যান এনামুল। তাঁর স্বজনেরা লাশ দেশে আনতে দিনের পর দিন ঘুরেছেন বিভিন্ন দপ্তরে। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। শেষ পর্যন্ত স্থানীয় সংসদ সদস্য শিবলী সাদিকের সহযোগিতায় ২ মাস ১৩ দিন পর এনামুলের লাশ দেশে আনা সম্ভব হলো।
গতকাল রাতে সরেজমিন দেখা যায়, অ্যাম্বুলেন্সে করে লাশ বাড়ি আসার পর শোকের ছায়া নেমে আসে পুরো পরিবারে। কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনেরা। লাশ দেখতে তাঁর বাড়িতে ভিড় করে এলাকাবাসী।
এনামুলের প্রতিবেশী শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘পরিবারটি খুবই অসহায়। একদিকে সন্তান হারানোর শোক, অন্যদিকে মারা যাওয়া সন্তানের লাশ ফেরত না পাওয়ার শোক। পরিবারটি গত দুই মাসের বেশি সময় ধরে লাশ দেশে আনতে নানা চেষ্টা চালিয়েছে। তবে কোনো চেষ্টাই কাজে লাগেনি। সর্বশেষ আমাদের এমপির সহযোগিতায় আজ (শুক্রবার) এনামুলের লাশ বাড়িতে এল।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক বলেন, ‘এনামুলের মৃত্যুর পর তাঁর পরিবার যোগাযোগ করলে আমি সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাসে কথা বলে লাশ দেশে আনার পদক্ষেপ নিয়েছি।’