রাঙামাটির কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানের বুক চিরে বেরিয়ে যাওয়া কাপ্তাই-আসাম বস্তি সড়কের কাপ্তাই লগ গেট হতে ২ নম্বর যাত্রীছাউনির ক্যামিলাছড়ি পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার সড়ক চলাচলে সতর্ক থাকার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের ভেরিফায়েড ফেসবুক থেকে এক সর্তকতামূলক পোস্টে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।
ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, কাপ্তাই-আসাম বস্তি সড়কের এই অংশ হাতির প্রাচীন করিডর হওয়ায় প্রায়ই হাতি চলাচল করে থাকে এবং গোধূলি ও সন্ধ্যায় এই পথে হাতির আনাগোনা আরও বেড়ে যায়। সুতরাং সন্ধ্যার দিকে এই পথ ব্যবহারে সাধারণ জনগণকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। চলাচলের সময় হাতির দেখা পেলে হাতিকে কোনো প্রকার বিরক্ত করা বা উত্তেজিত করার মতো কাজ না করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। চলাচলের সময় বেশি হর্ন ব্যবহার করে শব্দ সৃষ্টি না করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। যেকোনো সংকট মুহূর্তে নিকটস্থ বন বিভাগের সহায়তা নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এদিকে বুধবার রাতে যোগাযোগ করা হলে পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) এস এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘কাপ্তাই-আসাম বস্তি রোডে চলাচলের সময় অধিক সতর্ক থাকতে হবে। সতর্কতাই অঘটন এড়াতে সহায়তা করবে। আমরা সাইনবোর্ড স্থাপন ও প্রচারণামূলক কাজ করতে যাচ্ছি। সাধারণ জনগণকে এসব নির্দেশনা মেনে চলার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।’
বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ কর্মকর্তা ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, ‘সংরক্ষিত বনের মধ্য দিয়ে তৈরি হওয়া রাস্তায় ওয়াইল্ড লাইফ আসবে, এটাই স্বাভাবিক। তাদের পারাপার বা চলাফেরার দিকে দৃষ্টি রেখে এই রাস্তা ব্যবহার করতে হবে। বন বিভাগ এই রাস্তায় টহল জোরদার করেছে। চলাচলের সময় বন বিভাগের সতর্কতা মেনে চলার জন্য অনুরোধ জানাব।’
প্রসঙ্গত, ১৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় রাঙামাটি থেকে একটি সিএনজিতে জীবতলী আসার পথে কাপ্তাই- আসাম বস্তি সড়কের ১ নম্বর ক্যামিলাছড়ি এলাকায় একটি বন্য হাতির মুখোমুখি পড়ে ওই সিএনজিটি। এ সময় সিএনজিচালক দৌড়ে পালিয়ে রক্ষা পেলেও সিএনজির যাত্রী ঝরনা চাকমা (৬০) ও সুবিতা চাকমাকে (৭০) গুরুতর আহত করে হাতিটি। পরে তাঁদের রাঙামাটি সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে ঝরনা চাকমা মারা যান। এ ছাড়া গুরুতর আহত অপর যাত্রী সুবিতা চাকমাকে রাঙামাটি সদর হাসপাতাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনিও মারা যান।