নওগাঁ হানাদারমুক্ত দিবসে বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে স্থানীয় সামাজিক সংগঠন একুশে পরিষদ নওগাঁর উদ্যোগে শহরের এটিম মাঠে এই আয়োজন করে।
সরেজমিন দেখা যায়, বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে শারীরিক কসরতের এই আয়োজন হয়ে উঠেছিল আনন্দময়। প্রাণবন্ত এই আয়োজন উপভোগ করেন হাজারো মানুষ। প্রতিপক্ষের লাঠির আঘাত থেকে নিজেকে রক্ষা ও পাল্টা আঘাত করতে ঝাঁপিয়ে পড়েন লাঠিয়ালরা।
এমন বর্ণাঢ্য আয়োজন দেখে উৎসাহ দিচ্ছেন শত শত দর্শক। ঢাক-ঢোল আর কাঁসার ঘণ্টার তালে তালে লাঠিয়ালদের এই কসরত দেখতে মানুষের ঢল নামে এটিম মাঠে। আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী এই আয়োজনকে ঘিরে স্থানীয়দের মাঝে ছিল উৎসবের আমেজ। খেলায় স্থানীয় তিনটি লাঠিয়াল দল অংশগ্রহণ করে।
খেলা দেখতে আসা শিক্ষার্থী লুবানা আক্তার বলেন, ‘আব্বুর সঙ্গে লাঠিখেলা দেখতে এসেছি। এর আগে সরাসরি কখনো এই খেলা দেখেনি। দারুণ লাগছে খেলাটি।’
আরেক দর্শনার্থী নাইস পারভীন বলেন, ‘লাঠিখেলা গ্রামবাংলার একটি প্রাচীন খেলা। এমন আয়োজন করায় আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই। এই খেলাকে কেন্দ্র করে নতুন প্রজন্মকে জানতে পারছে আজকের এই দিনে নওগাঁ হানাদার মুক্ত হয়েছিল। সেই সঙ্গে হারিয়ে যাওয়া লাঠিখেলা সম্পর্কেও জানতে পারছে।’
আয়োজক একুশে পরিষদের সভাপতি ডিএম আব্দুল বারী বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা বিজয় অর্জন করেছি। কিন্তু নওগাঁ দুদিন পর হানাদার মুক্ত হয়েছে। পাকিস্তানি বাহিনীকে পরাজিত করে কীভাবে নওগাঁ স্বাধীন হয়েছে সেই বার্তা আগামী তরুণ প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাই। সেই লক্ষে আমরা গত কয়েক বছর থেকে হানাদার মুক্ত দিবসটি বিভিন্নভাবে উদ্যাপনের চেষ্টা করি। এরই অংশ হিসেবে আজকের এই লাঠি খেলার আয়োজন।’
এর আগে, সকাল ১০টায় দিবসটি উপলক্ষে এটিম মাঠ থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে আয়োজনের উদ্বোধন করেন নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান।
শোভযাত্রায় একুশে পরিষদ নওগাঁর উপদেষ্টা সাবেক অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম খান, সভাপতি ডিএম আব্দুল বারী, সাধারণ সম্পাদক এমএম রাসেলসহ সংগঠনের অন্যান্য সদস্য ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।