নওগাঁর বিভিন্ন হাট-বাজারে আগাম শিম উঠতে শুরু করেছে। জেলাজুড়ে এবারও শিমের বেশ ভালো ফলন হয়েছে। গতবারের তুলনায় বেড়েছে চাষ। মৌসুমের শুরু থেকেই ভালো দামে শিম বিক্রি করে খুশি চাষিরাও।
সরেজমিনে জেলার বদলগাছি, পত্নীতলা, মহাদেবপুর উপজেলার বেশ কয়েকটি মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, গাছে আগাম জাতের শিম থোকায় থোকায় ঝুলে আছে। আবার কোথাও ফুলে ফুলে ভরে গেছে শিমগাছ। কৃষক ও শ্রমিকেরা শিমখেতের পরিচর্যা করছেন। দাম বেশি, তাই আগেভাগেই খেত থেকে শিম তুলছেন চাষিরা।
কৃষকেরা জানিয়েছেন, ভালো লাভে আগাম শিম বিক্রি করতে পেরে খুশি তাঁরা। বাজারে পাইকারিতে প্রতি কেজি শিম ১৪০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শিম বিক্রি করে লাভের মুখ দেখে স্বস্তিতে কৃষক।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্র জানায়, জেলায় এ বছর ৩৫০ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের শিমের চাষ হয়েছে, যা গত বছর এই সময়ে ছিল ৩১০ হেক্টর। এ ছাড়া সব মিলিয়ে অন্যান্য জাতের শিম এখন পর্যন্ত ৫৮০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। আরো ৫০০ হেক্টর জমিতে শিম চাষের প্রস্তুতি চলছে। গত বছর প্রতি হেক্টরে ফলন হয়েছে ১০ থেকে ১২ মেট্রিক টন। চলতি বছর বিগত বছরের তুলনায় আরো বেশি ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
পত্নীতলা উপজেলার শিমচাষি রতন মন্ডল জানান, তিনি প্রায় তিন বিঘা জমিতে শিমের চাষ করেছেন। ফলন হয়েছে খুব ভালো। দাম পাচ্ছেন আশানুরূপ।
আরেক চাষি সুলভ মন্ডল জানান, আগাম জাতের সবজি হিসেবে আট কাঠা জমিতে শিম লাগিয়েছি। এর আগে ওই মাচায় করলা ছিল। এখন বাজারে শিম কম থাকায় দামও বেশি পাওয়া যাচ্ছে। ২০ দিনে তাঁর সব খরচ উঠে এসেছে।
কৃষক ফাতেমা আক্তার বলেন, আগের বছর করোনার কারণে যানবাহন না চলায় বাজারে সবজি বিক্রি করা যায়নি। এ জন্য লাভ করা সম্ভব হয়নি। এ বছর আগের মতো খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়নি। আবহাওয়াও ভালো আছে। ফলন ভালো হয়েছে, বাজারে দামও ভালো যাচ্ছে।
নওগাঁর পাইকারি সবজি ব্যবসায়ী রাইহানুল ইসলাম বলেন, বাজারে শিমের সরবরাহ চাহিদার তুলনাই কম হওয়ায় দাম বেশি। সরবরাহ বাড়লে কিছুদিন পর দাম স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে। বর্তমানে পাইকারিতে প্রতি কেজি শিম ১৩০ থেকে ১৫৫ টাকায় কিনছেন তিনি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামছুল ওয়াদুদ বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আগাম জাতের শিমের ভালো ফলন হয়েছে। তেমন কোনো রোগবালাই নেই। এখন অল্প পরিসরে উৎপাদন শুরু হয়েছে। দামেও ভালো পাচ্ছেন। তবে ভরা মৌসুমেও কৃষকেরা ভালো দাম পাবেন বলে আশা করছি। সবজির ভালো ফলন নিশ্চিতে মাঠকর্মীরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন।