নাটোরের লালপুরে অবৈধভাবে পাওয়ার ক্রাশারে (মাড়াইকল) আখ মাড়াই বন্ধ করতে অভিযান চালিয়ে তোপের মুখে পড়েছে প্রশাসন। পরে থানা-পুলিশের সহায়তায় মাড়াইকল জব্দ ও জরিমানা করা হয়েছে। গত শনিবার সন্ধ্যায় নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস এলাকায় উপজেলার ওয়ালিয়া ইউনিয়নের দিলালপুর-রায়পুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
সুগার মিলের মহাব্যবস্থাপক (কৃষি) মো. আসহাব উদ্দিন বলেন, শুক্রবার নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস এলাকায় উপজেলার ওয়ালিয়া ইউনিয়নের দিলালপুর-রায়পুর গ্রামে অবৈধভাবে পাওয়ার ক্রাশারে (মাড়াইকল) আখ মাড়াই বন্ধ করতে অভিযান চালায় প্রশাসন। এ সময় সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ বসাক, নাটোর ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান তানভির, মিলের জিএম (প্রশাসন) মুস্তফা সারোয়ার উপস্থিত ছিলেন।
প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে স্থানীয় মসজিদের মাইকে উসকানিমূলক ঘোষণা দিয়ে প্রশাসনের লোকজনের ওপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা চালায় এলাকাবাসী। তাৎক্ষণিক থানায় খবর দিলে স্থানীয় চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপ ও অতিরিক্ত পুলিশের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এ সময় পাঁচটি মাড়াইকলে অভিযান পরিচালনা করা হয়। সেই সঙ্গে ওই গ্রামের চিয়ামত আলীর ছেলে মো. মাহবুল হোসেনের মাড়াইকল জব্দসহ দুজনকে তিন হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
স্থানীয় কৃষকেরা বলেন, মিলে আখ সরবরাহ করে ঠিকমতো টাকা পাওয়া যায় না। ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তা ছাড়া মিলের চেয়ে মাড়াইকলে বেশি দামে আখ বিক্রি হয়। অনেক সময় অগ্রিম টাকা পাওয়া যায়, যার ফলে মিলে আখ না দিয়ে মাড়াইকলে দিতে সবাই আগ্রহী। এ ছাড়া খাওয়ার জন্য গুড় তৈরিতে অনেকে আখ মাড়াই করে থাকেন।
ওয়ালিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, স্থানীয়রা আবেগের বসে অভিযানে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। তিনি তাদের বুঝিয়ে অভিযান সফল করতে সহায়তা করেন।
লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহা. মোনোয়ারুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই অভিযান সম্পন্ন হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এ ধরনের ঘটনা এই এলাকায় আগেও ঘটেছে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ বসাক বলেন, প্রথমে এলাকার কিছু লোক সরকারি কাজে বাধা দেন। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান জনগণের পক্ষে ক্ষমা চেয়ে পুলিশ ও প্রশাসনের সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় পাঁচটি মাড়াইকলে অভিযান পরিচালনা করা হয়। ওই গ্রামের চিয়ামত আলীর ছেলে মো. মাহবুল হোসেনের মাড়াইকল জব্দসহ দুজনকে তিন হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।