পাবনার ঈশ্বরদীতে খেলাধুলা প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে দুই স্কুলের খেলোয়াড় ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর করা হয়েছে।
সংঘর্ষে ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, স্কুলশিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ পাঁচ–ছয়জন আহত হয়েছেন। আয়োজক ও ইউএনওকে প্রায় দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ উপজেলা ইউএনওর কার্যালয়ের সামনে থেকে চাকুসহ এক বহিরাগতকে আটক করেছে।
ঘটনায় আহতরা হয়েছেন ইউএনও সুবীর কুমার দাশ। তাঁর ডান হাতে ধারালো বস্তুর আঘাত লেগেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ছলিমপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর মধ্যপাড়ার সালাম সরদারের ছেলে সালমান সরদারের (১৭), তাঁর মাথা ও হাতের আঙুলে দুটি সেলাই লেগেছে। একই ইউনিয়নের ভাড়ইমারী গ্রামের মজিবর রহমানে ছেলে নাঈম ইসলাম (১৭) শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এরা দুজনই উপজেলার রিয়াজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য তিন দিন আগে ঈশ্বরদী উপজেলা চত্বরে ৫১ তম গ্রীষ্মকালীন খেলাধুলা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। মঙ্গলবার ছিল প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব। দুপুরে হাডুডু খেলার চূড়ান্ত পর্বে উপজেলার সাঁড়া ইউনিয়নের সাঁড়া ঝাউদিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও সাহাপুর ইউনিয়নের রিয়াজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতির জেরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ও মারামারি শুরু হয়।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার আরিফুল ইসলাম জানান, চূড়ান্ত হাডুডু খেলার শেষ মুহূর্তে সাঁড়া ঝাউদিয়ার খেলোয়াড় তৌফিক কাবাডি খেলায় ‘দম’ নেওয়ায় রিয়াজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলোয়াড়রা তৌফিককে জাপটে ধরে। এতে দর্শকসারি থেকে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু হয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারি বেঁধে যায়। এরপরই লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা ও মারামারির ঘটনা ঘটে।
ঈশ্বরদী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জানান, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উপজেলা চত্বরে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বহিরাগতরা যুক্ত হওয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়। পরে সেনাবাহিনী এলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
তিনি জানান, ছুরিসহ আটক যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইউএনও সুবীর কুমার দাশ হামলায় আহত হওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন।