একসময় কৃষিকাজে হালচাষের মাধ্যম ছিল গরু-মহিষ। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় এখন ব্যবহার করা হচ্ছে আধুনিক সব যন্ত্র। সেখানে ঘোড়া দিয়ে হালচাষের দৃশ্য অনেকটাই অবাক করে।
নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা মিলছে ঘোড়া দিয়ে হালচাষ। কৃষকেরা বলছেন, আধুনিক যান্ত্রিকতার যুগে গরু-মহিষের চাইতে ঘোড়ার দাম কম। গরু-মহিষের মতো ঘোড়া দিয়ে চাষাবাদের কাজ করা যায়। গত কয়েক দিনে উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করার দৃশ্য দেখা গেছে।
উপজেলার বরেন্দ্র বাজার মাঠে ঘোড়া দিয়ে জমি চাষ করছিলেন ভারদন্ড গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘১৪ হাজার টাকা দিয়ে ঘোড়াটি কিনেছেন। অথচ এক জোড়া ভালো গরু কিনতে দাম পড়বে প্রায় ১ লাখ টাকার মতো। আমার মতো কৃষকের পক্ষে এত টাকা দিয়ে গরুর জোড়া কেনা সম্ভব নয়। তাই দুইটা ঘোড়া কিনেছি যা দিয়ে চলছে হালচাষ।’
একই গ্রামের আরেক কৃষক মইনুর রহমান তিনিও ঘোড়া দিয়ে চাষ শুরু করেছেন। তিনি জানান, জামালপুর থেকে ৬০ হাজার টাকা দিয়ে দুটি ঘোড়া কিনেছেন। গরুর মতোই ঘোড়া দিয়ে চাষবাস করা যায়। কোনো অসুবিধা হয় না। আবার ঘোড়ার পিঠে চেপে চলাচল করা যায়।
তিনি বলেন, এক বিঘা জমিতে মই দিয়ে জমি সমান করতে গুনতে হয় ২০০-২৫০ টাকা।
উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের কৃষক মামুন হোসেন বলেন, ‘৫ বছর ধরে ঘোড়া দিয়ে চাষাবাদ করছি। নিজের এলাকার জমি ছাড়াও সাবাইহাট, দেলুয়াবাড়ী, কেশরহাট, মোহনপুর, ছাতড়া মাঠে ভাড়ায় চাষাবাদ করতে যাই।’
চাঁচাইবাড়ী গ্রামের কৃষক সাদেকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি কয়েক বছর ধরে ঘোড়া দিয়ে মই দিয়ে নিচ্ছি। হালের গরুর মতোই জমি সমান হয়।’
ঘোড়ায় হালচাষ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কামরুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বর্তমানে কৃষিকাজ যান্ত্রিকীকরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কৃষকেরা এখন আধুনিক কৃষি যন্ত্র ব্যবহার করে অল্প সময়ে বেশি জমি চাষ করেন। বর্তমানে সনাতন পদ্ধতির কৃষিকাজ নেই বললেই চলে। তবে কেউ ঘোড়া দিয়ে চাষবাস করলে তাঁর নিজস্ব কারণে করতে পারেন। আমরা কৃষকদের সব সময় কৃষিতে আধুনিক যন্ত্র ব্যবহার করার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকি।’