দুদিনের ব্যবধানে দুই বোনের মৃত্যুর বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ঢাকা থেকে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) একটি বিশেষজ্ঞ মেডিকেল টিম রাজশাহী আসছে।
আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরীন জানিয়েছেন, নিপাহ ভাইরাস রিপোর্ট নেগেটিভ হওয়ার পরই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই দলটি দ্রুতই রাজশাহী পৌঁছাবে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএফএম শামীম আহম্মদ বলেন, ‘পরীক্ষায় যখন কিছু পাওয়া গেল না, তখন আমিই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালকের (প্রশাসন) কাছে অনুরোধ করলাম যেন একটা বিশেষজ্ঞ দলকে রাজশাহী পাঠানো হয়।’
তিনি বলেন, ‘চার–পাঁচজনের এই বিশেষজ্ঞ দলটি আগামীকাল (সোমবার) হয়তো রাজশাহী এসে পৌঁছাবেন। তাঁরা হাসপাতালে আসবেন। পাশাপাশি এলাকায় যাবেন। লোকজনের সঙ্গে কথা বলবেন। পরীক্ষার জন্য বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করবেন। বিষয়টা বোঝার চেষ্টা করবেন।’
মারা যাওয়া এ দুই শিশু হলো—মুনতাহা মারিশা ও মুফতাউল মাশিয়া। আগামী ২ মার্চ মুনতাহা মারিশার বয়স হতো দুই বছর। আর ৩০ মে পাঁচ বছর পূর্ণ হতো মুফতাউল মাশিয়ার বয়স। তাদের বাবার নাম মনজুর রহমান (৩৫)। তিনি রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের গণিতের প্রভাষক। বাড়ি দুর্গাপুর উপজেলার চুনিয়াপাড়া গ্রামে। তবে স্ত্রী পলি খাতুন (৩০) ও দুই মেয়েকে নিয়ে চারঘাটের সারদায় ক্যাডেট কলেজের কোয়ার্টারেই থাকতেন তিনি।
শিশু দুটির মা জানান, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি কলেজ ক্যাম্পাসের গাছ থেকে পড়া বরই কুড়িয়ে এনে দুই শিশুকে খেতে দিয়েছিলেন গৃহকর্মী। পরদিন ১৪ ফেব্রুয়ারি ছোট মেয়ে মারিশার জ্বর আসে, সঙ্গে বমি। হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়। দুদিন পর ১৬ ফেব্রুয়ারি মাশিয়ারও জ্বর ও বমি শুরু হয়। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, রাজশাহীর সিএমএইচ হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়। পরদিন গতকাল শনিবার বিকেলে মাশিয়াও মারা যায়।
দুই শিশুর মৃত্যুর পর সংক্রমণের আশঙ্কায় তাদের বাবা–মাকে আর হাসপাতাল থেকে যেতে দেননি চিকিৎসকেরা। তাঁদের আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।